নিজেদের চারপাশের কতোই না গল্প আজও আমাদের জানা কিংবা অজানা রূপে রয়ে গেছে। দুর্গাপুজো মানেই এখন মানুষের কাছে হয়ে উঠেছে থিমের রোশনাই। কিন্তু বাংলার বুকে এহেন এমন বহু গল্প রয়েছে যা হার মানাতে সক্ষম বড়ো বড়ো থিম পুজোর প্লটকেও। আজ রাজবাড়ির পুজো-তে এহেনই এক পুজোর গল্প। পর পর সাতটি মন্দির। প্রতিটিতেই অধিষ্ঠিত রয়েছেন মা দুর্গা। তাঁর সন্তান-সন্ততিরাও রয়েছেন। তিনশো বছরেরও বেশি সময় ধরে এভাবেই পুজো পেয়ে আসছেন বীরভূমের খয়রাশোলের সাত মা। একই জায়গায় সাতটি প্রতিমা দেখতে ভিড় করেন দূর-দুরান্তের বহু মানুষ।
খয়রাশোলেই রয়েছে কবিরাজ ও মণ্ডল পরিবার। প্রথমে ছিল দুই পরিবারের দুটি পুজো। বংশবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে পুজোর সংখ্যাও। এখন সাতটি মন্দির তৈরি হয়েছে। এই দেবদেউলেই পুজো পান সাত মা।
{link}
প্রাচীনকাল থেকে আজ পর্যন্ত নিয়ম নিষ্ঠা সহকারে পুজো হয় এই সাত মায়ের। সপ্তমীতে আটটি পালকি ও ১৬টি ঘট নিয়ে নবপত্রিকা স্নানে যান পরিবারের লোকজন। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন গ্রামবাসীরাও। অষ্টমীতে প্রতিটি মন্দিরেই বলি হয় শ্বেত ছাগ। অষ্টমীকে কুমারী পুজো হয় দুটি মন্দিরে। বাকি মন্দিরগুলিতে কুমারী পুজো হয় না। দশমীতে দোলা বিসর্জন হয়। এদিন বিসর্জন হয় একটি মন্দিরের প্রতিমা। বাকি ছটি প্রতিমা নিরঞ্জন হয় একাদশীর দিন।
{link}
সাতটি মন্দিরেই পুজো হয় একই সঙ্গে। পঞ্জিকার নির্ঘণ্ট মেনে। রীতিনীতিও সাতটি মন্দিরে একই। বছরভর কর্মসূত্রে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলেও, কবিরাজ ও মণ্ডল পরিবারের আত্মীয়স্বজনরা পুজোর সময় জড়ো হন সাত মায়ের পুজো দেখবেন বলে। পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি গ্রামবাসীরাও মেতে ওঠেন পুজোর আনন্দে। চারদিন ধরে চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। করোনা আবহে অবশ্য এই অনুষ্ঠানে কাটছাঁট করা হয়েছে। তবে তাতে পুজোর অঙ্গহানি হয়েছে বলা যাবে না। কারণ নিষ্ঠা এবং ভক্তি দুইই অটুট সাত মায়ের পুজোয়।
{link}
কি যেন এক অভূতপূর্ব উপাখ্যান। একই পরিবারের পুজো অথচ মন্দির সাতটি, সাতটি মন্দিরে পূজিতা হন সাতজন মা। ধূমধাম করে। এইরকম আরও বেশ কিছু গল্প নিয়ে চলছে শেফিল্ড টাইমস-এর পুজো সংখ্যায় রাজবাড়ির পুজো সিরিজটি। ফিরব আবার, এরকমই এক অবাক করা পুজোর গল্প নিয়ে।
{ads}