চুমকী সূত্রধর
পরিযায়ী শ্রমিক এবং চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক ভারতবর্ষের ইতিহাসে খুবই পুরনো পরিশীলন। একদিকে মেক ইন ইন্ডিয়ার মতো বাঘা সব পরিকল্পনা যখন দেশকে কয়েকধাপ এগিয়ে নিয়ে যায় ঠিক তখনই চোখে পড়ে পরিযায়ী শ্রমের মতো পিছিয়ে আনা বিষয়।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের রিপোর্ট আনুযায়ী, এদেশে প্রায় ১৩৯ মিলিয়ান পরিযায়ী শ্রমিকের হিসেব পাওয়া যায় যেখানে বেশিরভাগ শ্রমিকই প্রায় বাধ্য থাকে আর্থিক অভাব মেটানোর তাগিদে এই শ্রমটিকে বেছে নিতে। অন্যান্য কারণ থাকে খাবারের অভাব, চুক্তিবদ্ধতা, বংশানুক্রমে প্রচলিত প্রথা, কৃষিকাজে মন্দা, বড় পরিবারের বোঝা ইত্যাদি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরিযাণ চোখে পড়ে বিহার,ঝাড়খন্ড, ছত্রিশগড়, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ এবং অন্যান্য রাজ্য থেকে এবং যে রাজ্যগুলো এই পরিযাণকে আকৃষ্ট করে তা হল মুম্বাই, দিল্লির মতো বিশ্বব্যাপী পরিচিত শহরগুলো। একটু লক্ষ্য করলে চোখে পড়বে যে এই রাজ্যগুলিই কৃষিকাজের জন্যে পরিচিত। বহু প্রচলিত প্রথা ‘চুক্তিবদ্ধ শ্রমও’ অনেকাংশে এই শ্রমের দাবি করে বসে। {ads}
নিত্যদিনের অন্যান্য ব্যাস্ততার মাঝে এই পরিযাণ এবং চুক্তিবদ্ধতা চোখে না পড়লেও করোনার মতো বিশ্বব্যাপী মহামারির সময় এদের হদিশ পাওয়া কপালে ভাঁজ ফেলেছে প্রত্যেকটি রাজ্য ও দেশের সরকারের। সবথেকে বড় যে বিষয়টি উঠে এসেছে তা হল পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে সঠিক হিসেবের অভাব। ইন্টারনেটে পাওয়া তথ্য থেকে যানা যায়, মার্চের পর থেকে দেশের লকডাউনে প্রায় ৩০০ জন শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছে । এই মৃত্যুর কারণ গুলো ছিল কখনও দারিদ্রতা ও অনাহার আবার কখনও বাড়ি ফেরার তাগিদে পথে দুর্ঘটনা, প্রশাসনিক গাফিলতি ইত্যাদি। তবে এই বিষয়গুলোকে আকষ্মিক গমনের কারণ হিসেবে গুরুত্ব দিতে গিয়ে পিছনে পড়ে থাকে বেশ কয়েকটি বিষয়।
অন্য যে বিষয়গুলো আঁখেরে কারণ ছিল সেগুলো হল, বড়ো ব্যাবসা গুলোর পরিযায়ী শ্রমিকদের ওপর নির্ভরতা এবং শ্রমের তুলনায় খুবই সামান্য পরিমানে অর্থ পাওয়া, বছরের নির্দিষ্ট সময়ে কাজে যুক্ত হওয়া ইত্যাদি বিষয়গুলি। তাই পরিযায়ী শ্রম এবং চুক্তিবদ্ধ শ্রমকে কমিয়ে আনার মূল মন্ত্র হিসেবে যা কাজ করবে তা হল এলাকা ভিত্ত্বিক উন্নয়ন এবং আপগ্রেডেশন। {ads}