শেফিল্ড টাইম্স ডিজিটাল ডেস্ক : বাংলাদেশ ছাত্র আন্দোলনে জ্বলছে। বাংলাদেশের (Bangladesh) সচেতন ছাত্রসমাজ চিরকালই দাবি আদায়ের আন্দোলনে শরিক হন। তারাই এক সময় শুরু করেছিল ভাষা আন্দোলন। আবার বাংলাদেশ উদ্বেলিত হয়ে উঠেছে 'কোটা' আন্দোলনে (Quota Andolon)। প্রশ্ন, কি এই 'কোটা' আন্দোলন? সময়টা ১৯৭১-৭২ সাল। দীর্ঘ ৯ মাসের আমরণ লড়াইয়ের পরে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের হাত থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেয় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ। জন্ম হয় স্বাধীন বাংলাদেশের। সেই মুক্তি আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন দেশের কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র-যুব থেকে সমস্ত শ্রেণীর মানুষ। অবশেষে আসে স্বাধীনতা (freedom)। স্বাধীনতার পরেই আইন করে স্বাধীন বাংলাদেশে চালু হয়েছিল 'কোটা' ব্যবস্থা। সেই মুক্তিযোদ্ধাদের এবং তাঁদের সন্তানদের জন্যে বাংলাদেশি সরকারি চাকরি এবং শিক্ষা ব্যবস্থায় 'কোটা' চালু রয়েছে এখনও। সেই কোটার বিরুদ্ধেই আন্দোলনে সরব বাংলাদেশের নবপ্রজন্ম (new generation)। কারণ, ১৯৭১ সালে লড়াই করা কোনও মুক্তিযোদ্ধা বা তাঁর সন্তান এখন আর সরকারি চাকরির আবেদন করার বয়সে নেই। তাই সেই কোটা তুলে দেবার জন্য এই আন্দোলন। বর্তমানের কোটা ব্যবস্থা, সেই সব মুক্তিযোদ্ধাদের বংশধরদের জন্যে। এই আবহে মেধার স্থান হারিয়ে যাবে বাংলাদেশে। আর নিজের সেই অধিকার আদায়ের জন্যেই রাস্তায় নেমেছে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ।
{link}
প্রসঙ্গত, ২০১৮-তেও সংরক্ষণ-বিরোধী আন্দোলনে বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে মোট ৫৬ শতাংশ সংরক্ষিত এবং ৪৪ শতাংশ সাধারণের জন্য নির্ধারিত ছিল। সেই সংরক্ষণ বাতিলের দাবিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশ। তবে তখনকার মতো আন্দোলন থামাতে সমর্থ হয়েছিল সরকার। শুরু হয় আইনি লড়াই। সাত জন মুক্তিযোদ্ধার স্বজন ২০১৮-র সংরক্ষণ বাতিলের নির্দেশনামার বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে ২০২১-এ আদালতে যান। ৫ জুন আদালত রায় দেয়, হাসিনা সরকারের (Sheikh Hasina) নির্দেশ অবৈধ। তার পরই ফের আন্দোলনের পথে নামে ছাত্র এবং যুব সমাজের (youth society) একাংশ। ইতিমধ্যেই হাসিনা সরকার বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন করেছে।
{link}
আন্দোলনের বিরুদ্ধে পুলিশ হয়ে উঠেছে নির্মম। আন্দোলন বন্ধ করার জন্য সরকারের দমন নিপীড়ন চলেছে। বাংলাদেশে বর্তমানে চলছে ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট। তবে তার আগে পর্যন্ত একের পর এক মর্মবিদারক চিত্র সামনে এসেছে সেদেশ থেকে। রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশে এখনও পর্যন্ত ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে অসমর্থিত সূত্রের দাবি, সেই সংখ্যাটা ৫০-এর গণ্ডি ছাড়িয়ে গিয়েছে। এবং মৃতদের অনেকেই স্কুল ছাত্র। বাংলাদেশ গড়ে তোলার কথা যাঁদের, তাঁদেরই ওপরে হাসিনার নির্দেশে 'হার্ডলাইন হামলা' চালিয়েছে পুলিশ, ব়্যাব। অভিযোগ, অনেক আন্দোলনকারীকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে পর্যন্ত গুলি করা হয়েছে। ঘটনা কতটা সত্যতা হয়তো কিছুদিন পরেই প্রকাশ পাবে, কিন্তু সরকারি দমন পীড়ন এখনও বন্ধ করা প্রয়োজন।
{ads}