নিজস্ব সংবাদদাতা: ফের ছাত্র মৃত্যুর ঘটনা রাজস্থানের কোটায়। এদিন আত্মহত্যা করলেন দুই পড়ুয়া। সব মিলিয়ে চলতি বছরে এ পর্যন্ত মোট ২৪ জন পড়ুয়ার মৃত্যু হল কোটায়। রবিবার এক দিনে আত্মহত্যা করেন দুই ছাত্র। একজনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় হস্টেলের ঘর থেকে। অন্যজন একটি পরীক্ষাকেন্দ্রের ছ তলা থেকে ঝাঁপ দেন। এক দিনে জোড়া ছাত্রের আত্মহত্যায় নড়েচড়ে বসেছে কোটার জেলা প্রশাসন। কোটার জেলাশাসক ওমপ্রকাশ বুনকার কোচিং সেন্টারগুলিকে এক মাসের জন্য পক্ষীক্ষা স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। জারি হয়েছে এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিও।
কোটার পুলিশ সূত্রে খবর, এদিন দুপুরে কোটার একটি কোচিং সেন্টারে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন মহারাষ্ট্রের আবিষ্কার শুভাঙ্গী। তিনি মেডিক্যালের প্রবেশিকা পরীক্ষা নিটের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। পরীক্ষা শেষ হওয়ার মিনিট পাঁচেক আগে হল থেকে বেরিয়ে ছ তলা থেকে ঝাঁপ দেন শুভাঙ্গী। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ডেপুটি পুলিশ সুপার ধরমবীর সিংহ বলেন, আবিষ্কার দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। তিনি কোটায় নিটের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। রবিবার তাঁর একটি পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষাকেন্দ্রের ছ তলা থেকে ঝাঁপ দেন তিনি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
{link}
এই ঘটনার রেশ কাটার আগেই ফের আসে ছাত্রের আত্মহননের ঘটনার খবর। এদিন বিকেলে এলাকার একটি হস্টেলে নিজের ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় বিহারের বাসিন্দা আদর্শের দেহ। তিনিও নিটের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এদিনের এই জোড়া আত্মহননের আগে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছিল ১৫ অগাস্ট। সেদিন কোটারই একটি হস্টেলের ঘর থেকে উদ্ধার হয় বিহারের গয়ার বাল্মিকী জাঙ্গিদের দেহ। আত্মহননের ঘটনায় লাগাম টানতে জেলা প্রশাসনেতর তরফে হস্টেলে সিলিং ফ্যান, স্প্রিং লাগানো এবং বারান্দায় জাল লাগানোর নির্দেশ দিয়েছিল হস্টেল কর্তৃপক্ষকে। সেই মতো ব্যবস্থাও নেন হস্টেল কর্তৃপক্ষ। পড়ুয়াদের নিয়মিত কাউন্সেলিং করানোর ব্যবস্থাও নিয়েছেন তাঁরা। তার পরেও রাশ টানা যাচ্ছে না আত্মহত্যার প্রবণতায়। পুলিশের তথ্য বলছে, ২০২২ সালে কোটায় ছাত্রমৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১৫। ২০১৮ সালে এই সংখ্যা ছিল ২০, ২০১৭ তে ছিল সাত, ২০১৬ সালে ১৭ এবং ২০১৫ তে ১৮ জন। চলতি বছরের অষ্টম মাসে সেই সংখ্যা ইতিমধ্যেই ২৪ ছুঁয়েছে। হত্যা রুখতে সম্প্রতিই জেলা প্রশাসনের তরফে হোস্টেলগুলিতে সিলিং ফ্যানে স্প্রিং লাগানো ও বারান্দাগুলিতে লোহার জাল লাগানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি পড়ুয়াদের নিয়মিত কাউন্সেলিং করানোরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। রবিবার পরপর দুই পড়ুয়ার আত্মহত্যার ঘটনার পর জেলাশাসক আগামী এক মাস সমস্ত কোচিং সেন্টারে পরীক্ষা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
{ads}