বর্তমানে কেন্দ্রীয় রাজনীতি তোলপাড় একটাই প্রসঙ্গে, কেন তৃণমূল কংগ্রেস ধীরে ধীরে শক্তিক্ষয় ঘটাচ্ছে কংগ্রেসের। একাধিক উত্তর উঠে আসলেও শিলমোহর দেওয়া সম্ভব হয়ে উঠছে না একটিতেও। রাজনীতিতবিদদের একটি অংশের মতামত কংগ্রেসকে শেষ করতে চান ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর ওরফে পিকে! বিজেপির সঙ্গ ছাড়ার পর তিনি চুক্তিবদ্ধ হন তৃণমূলের সঙ্গে। জোড়াফুল শিবিরকে ভোট বৈতরণি পার করাতে চুক্তিবদ্ধ হন তিনি। এই সময়ই কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করেন পিকে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি ও প্রিয়ঙ্কা গান্ধি বঢরা তাঁকে দলে নিতে রাজি হলেও, কংগ্রেসের একাংশ গররাজি ছিলেন। তাই কংগ্রেসে যোগ দেওয়া হয়নি তাঁর। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, সেই কারণেই কংগ্রেসকে শেষ করার পণ করেছেন ভোট কুশলী।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয় তৃণমূল। এর যাবতীয় কৃতিত্ব যে পিকে-র, তা স্বীকার করেন অতি বড় নিন্দুকও। তৃণমূল নেত্রীকে দিল্লিতে জায়গা দিতে দিল্লি উড়ে যান তিনি। সেখানে বর্ষীয়ান এনসিপি নেতা শারদ পাওয়ারের বাড়িতে বিজেপি-বিরোধী কয়েকটি দলকে নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। তার আগে মহারাষ্ট্রে গিয়ে দেখা করেন পাওয়ারের সঙ্গে। সে যাত্রায় পিকে দেখা করেন শাহরুখ খানের সঙ্গেও।
{link}
দিল্লিতে শারদ পাওয়ারের বাড়িতে ১০টি আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেন পিকে। তখনই পাওয়ার স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কংগ্রেস ছাড়া বিকল্প জোট দানা বাঁধবে না। এর পরেই কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে একপ্রকার মনস্থ করে ফেলেন পিকে। কিন্তু কংগ্রেসের এক শ্রেণীর নেতা তাঁকে বড় কোনও পদ দিতে রাজি হননি। স্বাভাবিকভাবেই আর কংগ্রেসে যোগ দেওয়া হয়ে ওঠেনি তাঁর।
রাজনৈতিক মহলের মতে, এর পরেই কংগ্রেসকে শেষ করার পণ করে ফেলেন পিকে। সেই মতো তিনি কংগ্রেস ভাঙানোর খেলায় মাতেন। তাঁর হাতযশেই রাজ্যে রাজ্যে ভাঙছে কংগ্রেসের সংগঠন। প্রয়াত কংগ্রেস নেতা সন্তোষমোহন দেবের কন্যা কংগ্রেসের সুস্মিতা দেবও যোগ দেন তৃণমূলে। গোয়ার তিনবারের কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রীও হাতে তুলে নেন জোড়াফুল আঁকা ঝান্ডা। প্রিয়ঙ্কা গান্ধি বঢরা ঘনিষ্ঠ উত্তরপ্রদেশের ২ কংগ্রেস নেতাও কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন পিকের কারণে। বিহারের নেতা পবন বর্মা কিংবা হরিয়ানার নেতা অশোক তানওয়ারও তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন পিকের কৌশলী যুক্তিতে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিজেপি-বিরোধী শক্তির মুখ করে আসলে কংগ্রেসকেই মাত দিতে চাইছেন প্রশান্ত কিশোর। কিন্তু এই প্রসঙ্গেই কেন্দ্রীর রাজনীতিতে যতো গোল বেঁধেছে। কংগ্রেস বিনা আদৌ বিজেপির মতো শক্তিশালী দলকে পরাস্ত করা সম্ভবপর হবে তো? এভাবে কংগ্রেসের শক্তিক্ষয় করে তো বিজেপিরই সুবিধা করে দিচ্ছেন তিনি!
{ads}