এইবছর করোনা পরিস্থিতিতে বেলুড় মঠের দুর্গা পূজোয় দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হল। মঙ্গলবার পূজোর বিষয়ে বেলুড় মঠের সন্ন্যাসীদের সঙ্গে বৈঠক করেন হাওড়া সিটি পুলিশের কর্তারা।
২০০০ সাল পর্যন্ত মঠের মূল মন্দিরের ভিতরেই পুজো হত, কিন্তু দিনে দিনে ভক্ত সমাগম বেড়ে চলায় মঠের সন্ন্যাসীরাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে মূল মন্দিরের পাশে মঠের বিস্তীর্ণ মাঠেই দুর্গাপূজা এবং কুমারীপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এইবার অতিমারি পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এবং দর্শনার্থীদের সুরক্ষার কথা ভেবেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে মূল মন্দিরের ভিতরেই পূজার আয়োজন করা হবে।তবে প্রতি বছরের মতই নিষ্ঠাভরে কুমারী পূজা ও হবে।প্রতিবছর সন্ন্যাসীরা কোলে করে কুমারী মা কে মণ্ডপে নিয়ে আসেন কিন্তু এইবছর কুমারীর পরিবারের সদস্যরাই তাঁকে নিয়ে আসবেন। সেখানেও ভক্ত এবং দর্শনার্থীরা প্রবেশ করতে পারবেন না, এবং কোনোপ্রকার প্রসাদ বিতরণ ও করা হবেনা।
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হলেও বেলুড় মঠের কুমারী পূজার সাথে বাঙালিরা আত্মিক টান অনুভব করেন। এক অমোঘ আবেগের টানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ ছুটে যান বেলুড় মঠে।কিন্তু কেন? ফিরে দেখা যাক,
গুরুদক্ষিণা দিতেই দক্ষিণেশ্বরের ঠিক উল্টো দিকে গঙ্গানদীর পশিম তীরে স্বামীজি ১৮৯৭ সালে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বেলুড় মঠ।১৯০১ সালেই প্রথমবারের জন্য বেলুড় মঠে শুরু হয় দুর্গাপূজা, সারদা মায়ের নামে সঙ্কল্প করে মাতৃ রূপে তাঁর পুজা করলেন স্বামিজী।এরপর থেকেই ছোট্ট কুমারী কে দেবীরূপে নিষ্ঠা ভরে পূজা করা হয় বেলুড় মঠে। প্রতি বছর অষ্টমী তিথিতে কন্যা কুমারীকে দেবীর সাজে সাজিয়ে পাটায় বসিয়ে মঠের প্রবীণ সন্ন্যাসী মহারাজেরা আনেন একচালা প্রতিমার সামনে তারপর দেবীরূপে তার আরাধনা করা হয় মঠের সবরকম নিয়ম রীতি মেনেই। অষ্টমীর দিন বেলুড় মঠে ঘটে ভক্তদের সমাগম, উপস্থিত থাকেন মঠের সভাপতি মহারাজ সহ অন্যান্য সন্ন্যাসী মহারাজেরাও, পূজার পর চলে প্রসাদ বিতরণ।
ফাইল ভিডিও
প্রতিবছরের মতো এই বছরও বেলুড় মঠ তার আধ্ম্যাতিকতা এবং আভিজাত্যকে বজায় রাখছে ঠিকই তবে ভক্তদের কল্যাণ এর কথা মাথাতে রেখেই এইবছর দূরত্ববিধিকেই গুরুত্ব্ব দিয়ে ভক্তদের দর্শন বন্ধ রাখাই শ্রেয় বলেই মতামত বেলুড় মঠ কতৃপক্ষ এবং প্রশাসনের, এইবার দর্শনার্থীদের অনলাইনেই দেখতে হবে বেলুড় মঠের পূজা, আর তাতেই ভক্তরা পাবেন আবেগের ছোঁওয়া।কিন্তু দুধের স্বাদ কি ঘোলে মিটবে?