header banner

বিসর্জনে নয়, আবাহনেই বিষাদ

article banner

চুমকী সূত্রধর

এবারের পুজো ছিল একটু অন্যরকম, একটু সতর্কতার। প্রত্যেকবারের জাঁকজমকপূর্নতা ও বিলাসিতাকে ছেড়ে নতুন পরিস্থিতির সাথে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া। একে তো পর পর দুটো মলমাস তার পরে মহালয়ার ৩৫ দিনপরে পূজো মানুষকে হতাশায় রেখেছিল, তারপর এই অতিমারী অতিষ্ঠ করে তুলেছিল বাঙালীর উৎসবের আনন্দকে।
করোনা মহামারী প্রায় বছরের প্রথম থেকেই স্তব্ধ করে দিয়েছে সারা বিশ্বের ব্যবসা বাণিজ্য সহ স্বাস্থব্যাবস্থা এবং অন্যান্য বিষয়কে। তার ওপর রয়েছে বেকারত্ব এবং অন্যান্য সমস্যা। এই পরিস্থিতিতে যেকোনো উৎসবই দ্বিগুন করতে পারে সংক্রমণের হারকে। 
দুর্গা পুজো হলো বাঙালির কাছে আবেগ, এই একটি সময় যখন মানুষ সমস্ত খারাপ লাগাকে দূরে সরিয়ে দিয়ে আনন্দে মেতে ওঠে।প্রত্যেকবারই প্রায় জুলাই আগস্ট থেকেই শুরু হয়ে যায় মানুষের কেনাকাটা, শপিং মলে এই স্টোর থেকে অন্য স্টোরে নিজের পছন্দের জিনিস তুলে নেওয়া, পুজোয় ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যানিং আরো কত কিছু। কিন্তু করোনা পরিস্তিতি সব কিছুই ধুলোয় মিশিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে অনেক আগে থেকেই। শ্রেষ্ঠ উৎসব হবার কেনাকাটার সাথেও থাকে ঘুরতে যাওয়া প্ল্যানিং। দেশ বিদেশ থেকে প্রবাসীদের ঘরে ফেরার সময়। ক্ষুদ্র থেকে বড় ব্যবসায়ীদের কাছে ব্যবসার মোক্ষম সুযোগ। সেই সবের কোনো কিছুই এবারের পুজোয় দেখা যায়নি। ব্যাবসায়ী থেকে শুরু করে দিন মজুর প্রত্যেকের মুখে ছিল হতাশা। মার্চের শেষ থেকে যাতায়াত ব্যবস্থার স্তব্ধতা প্রায় দুমড়ে মুচড়ে দিয়েছিল সব আনন্দকে। এই পরিস্থিতিতে যেখানে পর্যটন শিল্প থেকে শুরু করে সব কিছুই প্রায় শিকেয় উঠেছিল সেখানেই খুব অদ্ভুতভাবে দেখা পড়ছিল সতর্কতাকে কাটিয়ে উঠে বেপরোয়া মনোভাব বৃদ্ধির চিত্র। বছরের প্রথম থেকে যে সাবধানতা দেখা গিয়েছিল মানুষের মধ্যে তার অধিকাংশই কমে এসেছিল এই পুজো পরিস্থিতির ঠিক আগের মুহুর্তে।
ধীরে ধীরে বেড়েছে ভিড় আর উন্মাদনা। তার সাথে রয়েছে যথেচ্ছ ভাবে স্যানিটেশন ব্যবস্থার অবনতি। 
এই ক্রমবর্ধমান বেপরোয়া মনোভাব রুখতে শেষ মেশ হস্তক্ষেপ করেছে হয় হাই কোর্ট। তুলে ধরেছে দূরত্ব বজায় রাখার নানান পরিকল্পনা। প্যান্ডেল হপিং থেকে শুরু করে দূরত্ব বজায়ের বিভিন্ন নিয়ম। কিন্তু তবুও কি ভিড়ের চিত্র আশার আলো দেখাচ্ছে?{ads}
পুজোর ১০ ছিল জায়গায় জায়াগায় জনসংযোগ আর খাবারের দোকান গুলোতে মারাত্বক ভিড়। দূরত্ব বজায় রাখার নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে প্রায় এক রকম বিপ্লব দেখা গিয়েছিল বললেই চলে। এ যেন ছিল আমেরিকার নো মাস্ক আন্দোলনের সমতুল্য ছোট্ট একটা প্রয়াস।
যেখানে দিন দিন সংক্রমন বিশ্বের প্রথম সারির দের গুলোকে টক্কর দিচ্ছে সেখানে এই বেপরোয়া মনোভাবকি আদেও পারবে আগামীদিনে নিজেকে সুস্থ রাখতে, পরিবেশ সুস্থ রাখতে? শেষ মেশ মানুষের উন্মাদনার কাছে হার মানতে বাধ্য হলো প্রশাসন। হাজার প্রচেষ্টা ও পরিকল্পনা অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করার পরেও শিথিল হয়ে পড়লো কঠোরতা। এই হার মানা কি পারবে পরবর্তী দিনগুলোতে জনজীবনকে রক্ষা করতে? পরিবেশ রক্ষা করতে? প্রশ্ন কিন্তু একটা থেকেই যায়।{ads}

Kolkata Durga puja Shopping food covid situation sanitization mask Chief Minister West Bengal Durga Puja kolkata howrah west bengal bangladesh india durga puja sheffield ttimes durga puja 2020 covid19

Last Updated :