শেফিল্ড টাইম্স ডিজিটাল ডেস্ক : কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) এই নতুন উদ্যোগ, যা সিসিটিভি ক্যামেরায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে নেয়া হয়েছে, তা শহরের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এক বিপ্লবী পদক্ষেপ হতে পারে। গত কয়েক বছরে শহরের অপরাধ পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশ নতুন প্রযুক্তির ব্যবহারকে গুরুত্ব দিয়েছে, কিন্তু এবার যে পরিমাণ উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহৃত হতে যাচ্ছে, তা শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় এক নতুন দিশা দেখাবে। এআই-চালিত সিসিটিভি ক্যামেরাগুলি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যে, এগুলি শুধু সাধারণভাবে নজরদারি চালাবে না, বরং এতে থাকা মোশন ডিটেক্টর এবং অ্যালার্ম সিস্টেমের মাধ্যমে কোনো অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটলে তা সরাসরি পুলিশ কন্ট্রোল রুমে জানিয়ে দেবে। উদাহরণস্বরূপ, যদি দিনে কোনো রাস্তায় অস্বাভাবিকভাবে বেশি মানুষ বা গাড়ি চলাচল করতে দেখা যায়, তাহলে সিসিটিভি ক্যামেরা তা শনাক্ত করে সতর্ক বার্তা পাঠাবে। রাতের বেলাতেও, যেখানে সাধারণত মানুষের সংখ্যা কম থাকে, সেখানে অতিরিক্ত মানুষের উপস্থিতি বা অস্বাভাবিক কার্যকলাপ ঘটলেই তা পুলিশের নজরে চলে আসবে।
{link}
এই বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা অপরাধীদের শনাক্তকরণ এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দ্রুত সহায়তা করবে। বিশেষ করে এই সিসিটিভি ক্যামেরাগুলি নারীদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে। কলকাতা শহরের বিভিন্ন জায়গায় নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধের সংখ্যা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং এই সিসিটিভি ক্যামেরা অপরাধী বা দুষ্কৃতীদের গতিবিধি ট্র্যাক করে পুলিশকে দ্রুত ঘটনা স্থলে পৌঁছানোর সুযোগ দেবে। এর ফলে, অপরাধী বা আক্রমণকারীরা শহরের নির্জন বা জনশূন্য এলাকায় নিরাপদে কাজ করতে পারবে না। পুলিশের টহল ও মনিটরের মাধ্যমে ঘটনার প্রতি নজরদারি অপরাধ রোধে বেশ কার্যকরী হবে। দুষ্কৃতীরা যদি সিসিটিভি ক্যামেরার সঙ্গে কোনও অস্বাভাবিক কিছু করার চেষ্টা করে, যেমন ক্যামেরার লেন্স আড়াল করা বা তার ছবি গ্রহণের জন্য বাধা সৃষ্টি করা, তখনও সিসিটিভির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ওই অবস্থাকে শনাক্ত করবে এবং সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ কন্ট্রোল রুমে জানিয়ে দেবে। ফলে, এই ধরনের দুষ্কৃতী কার্যকলাপ দ্রুত থামানো সম্ভব হবে। এমনকি যদি কোনও সিসিটিভি ক্যামেরার আইপি অ্যাড্রেস কোনও কারণে এক হয়ে যায় বা নেটওয়ার্কের সমস্যা হয়, তখনও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে সেই সমস্যা শনাক্ত হয়ে যাবে এবং পুলিশ দ্রুত পরিস্থিতি সামলানোর জন্য পদক্ষেপ নেবে।
{link}
এছাড়া, এই সিসিটিভি ক্যামেরার সাহায্যে দুর্ঘটনা, ট্রাফিক সমস্যা বা অন্যান্য জরুরি পরিস্থিতির ক্ষেত্রেও পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সক্ষম হবে। রেকর্ডার সিস্টেমের মাধ্যমে সমস্ত ফুটেজ সেভ হয়ে থাকবে, তাই কোনো কারণে ফুটেজ না আসলেও তা সংরক্ষিত থাকবে এবং ভবিষ্যতে প্রয়োজনে তা ব্যবহার করা যাবে। কলকাতার পাশাপাশি, রাজ্যের অন্যান্য শহর এবং জেলা থেকেও এই প্রযুক্তি ব্যবহারের পরিকল্পনা চলছে। শহরের সুরক্ষার পাশাপাশি, এই সিসিটিভি ব্যবস্থায় অন্য কোন থানা বা কমিশনারেটকে সমন্বিতভাবে কাজ করার সুযোগ মিলবে, যা সমগ্র রাজ্যজুড়ে অপরাধের বিরুদ্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে সহায়তা করবে। এই উদ্যোগের ফলে কলকাতা, এমনকি রাজ্যের অন্যান্য অঞ্চলের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ আরও আধুনিক এবং দক্ষ হয়ে উঠবে। এই সিসিটিভি ব্যবস্থার সবচেয়ে বড় উপকারিতা হলো, এটি একে অপরের সাথে সংযুক্ত এবং সারা শহরজুড়ে সমন্বিতভাবে কাজ করবে, ফলে শহরের কোনো একটি এলাকার কোনো সমস্যা সমাধানে দ্রুত সমন্বয়ের মাধ্যমে পুলিশ কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে পারবে।
{ads}