শেফিল্ড টাইম্স ডিজিটাল ডেস্ক : গত শনি ও রবিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Jadavpur University) যা ঘটে গেলো তা কি শুধুই ঘটনাচক্রে ঘটে যাওয়া ঘটনা? নাকি এর গভীরে অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে? এই প্রশ্ন শুধুই নাগরিক মহলের নয়, এই প্রশ্ন খোদ আদালতের। যাদবপুর কাণ্ডের নেপথ্যে গোয়েন্দা বিভাগ, পুলিশ প্রশাসনের ব্যর্থতাকেই দায়ী করেছেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। তাঁর আশঙ্কা, কড়া হাতে মোকাবিলা না করলে রাজ্যের সব প্রান্তেই এই বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই পরিস্থিতি তৈরি হলে সামলানো কঠিন হবে। মনে করিয়ে দিয়েছেন, সামনেই বিধানসভা নির্বাচন। সতর্ক থাকতে হবে পুলিশকে। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিচারপতি বলেন,"নিরাপত্তা পায় এমন ব্যাক্তির কাছাকাছি যদি বিক্ষোভকারীরা চলে আসেন, সেক্ষেত্রে সমস্যা হবে। পরিস্থিতি যেন প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মতো না হয়।"
{link}
তাঁর আরও সংযোজন, "এটা যদি উদাহরণ হয় তাহলে কিন্তু গোটা রাজ্যে এটা ছড়িয়ে পরবে। দু'পক্ষকেই দায়িত্বশীল হতে হবে। মানুষ একবার বিশৃঙ্খল হয়ে পড়লে সামলাতে সময় লাগবে।" একটা বিষয় অবশ্য বিচারক উল্লেখ করেন নি যে যদি বাংলার সমস্ত কলেজ ইউনিভার্সিটিতে রাজ্য যথাসময় ছাত্র নির্বাচন করতো, তাহলে হয়তো এই পরিস্থিতি তৈরী হতো না। রাজ্য কলেজ, ইউনিভার্সিটিতে নির্বাচন চাইছে না। ছাত্রসমাজ চিরকাল প্রতিষ্ঠান বিরোধী। ফলে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ফলাফল শাসক দলের প্রতিকূলে যাওয়ার সম্ভাবনায় বেশি। এর সঙ্গে বিজেপি এখানে অন্য এক খেলা দেখতে পাচ্ছে। সুকান্ত মজুমদার বলেছে, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গে SFI-কে প্রাসঙ্গিক করতে চাইছেন, মানে CPM-কে প্রাসঙ্গিক করতে চাইছেন। বাংলাদেশের চিত্র দেখার পরে পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) হিন্দুরাও বুঝতে পেরেছেন আগামী দিনে বাংলাদেশ 'পার্ট টু' তাঁদের জন্য অপেক্ষা করছে। হিন্দু ভোটকে ভাগ করতে হবে। হিন্দু ভোট যদি সব বিজেপি পেয়ে যায় আর চার পার্সেন্ট পেয়ে গেলেই তো BJP সরকারে চলে আসবে।" অন্যদিকে এই অভিযোগ ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছে SFI. তারা স্পষ্ট জানিয়েছে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে তাদের আলোচনা ছিল মূলত ইউনিভার্সিটি নির্বাচন নিয়ে।
{link}
সেই ক্ষেত্রে ছাত্রসমাজ হয়তো একটু বেশি উদ্ধত হয়ে উঠেছিল। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির আঘাতে এক ছাত্র আহত না হলে এই পরিস্থিতি কখনোই হতো না। অন্যদিকে একটা বিষয় খুবই স্পষ্ট হয়েছে যে আর জি কর কান্ড থেকে সরকার বিরোধী ছাত্র আন্দোলন বেড়ে চলেছে। এই প্রসঙ্গে আদালত বাংলাদেশ প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। আমরা দেখেছি, পড়শি রাষ্ট্র বাংলাদেশে নৈরাজ্য তৈরির সলতে পাকিয়েছিল ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করেই। সাধারণ ছাত্রদের সামনে রেখে কলকাঠি নেড়েছিল জামাতের মতো একাধিক মৌলবাদী, বিচ্ছিন্নতাবাদী, জেহাদি শক্তি। তাদের অঙ্গুলিহেলনেই সে দেশের সরকার বদলেছে। চরম অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। আর সেই কারণেই সরকারকে সতর্ক করে দিয়েছে আদালত। তবে ঘটনা প্রবাহ আর কতদূর এগোতে পারে তার উত্তর দেবে -'সময়'।
{ads}