header banner

১৯৯৮-এর পুনরাবৃত্তি, মরোক্ককে হারিয়ে কাতারে তৃতীয় স্থান মদ্রিচের ক্রোয়েশিয়ার

article banner

নিজস্ব সংবাদদাতা: সাল ১৯৯৮, সেই বছর ফুটবল বিশ্বকাপে ইউরোপের ১২টি দেশের সাথে অংশগ্রহণ করেছিল আরও একটি দেশ, ক্রোয়েশিয়া। আয়তন ও জনসংখ্যায় অত্যন্ত ছোট। কিন্তু সেই ছোট্ট দেশই ফুটবলের ময়দানে বিপক্ষের শিড়দাঁড়ায় ভয় ধরিয়ে দেয়। সেই বছর সমগ্র ফুটবল বিশ্বকে চমকে দিয়ে তৃতীয় স্থান দখল করে ক্রয়েশিয়া। ১৯৯৮ এর পর ২০১৮-এ রাশিয়া বিশ্বকাপে স্বপ্নের দৌড়, ফাইনালে পৌঁছেও ফ্রান্সের বিপক্ষে পরাজিত হতে রানার্স হিসেবে শেষ করেচ ক্রোয়েশিয়া। ২০২২-এ কাতারের মঞ্চেও ট্রফির বহু কাছে এসেও, সেমিফাইনালে আটকে যেতে হয় মেসির আর্জেন্টিনার কাছে। কিন্তু সেমিফাইনালে হারলেও তৃতীয় স্থান হাতছাড়া করেনি ক্রোয়েশিয়া। ২০২২-এ সেই ১৯৯৮-এর পুনরাবৃত্তি। কাতারে থার্ড র‍্যাঙ্ক ম্যাচে ২-১ গোলে মরোক্ককে হারিয়ে তৃতীয় স্থানে নিজেদের দৌড় শেষ করল ক্রোয়েশিয়া। 

রবিবারের হাইভোল্টেজ ফাইনালের আগে কার্যত স্পটলাইটহীন ম্যাচ এই বিশ্বকাপের তৃতীয় স্থানের লড়াই। কিন্তু এই ম্যাচই কার্যত ফাইনাল ম্যাচে মুখোমুখি হওয়া দুই দলের। তৃতীয় স্থানই যেন ম্যাচ জয়ের পর তাদের কাছে চ্যাম্পিয়নশিপের ট্রফির মতো। শনিবার কাতারের মঞ্চেও তার ব্যাতিক্রম হয়নি। দুই দলই শুরু থেকেই কার্যত মরনপন লড়াই শুরু করে এই 'তৃতীয় স্থান'-এর। শুরুতেই চমক অপেক্ষা করছিল দর্শকদের জন্যেও। ম্যাচের ৭ মিনিটেই ১-০ গোলে এগিয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া। নিজের শরীরকে সম্পূর্ণ হাওয়ার ভাসিয়ে ঝাঁপ দিয়ে বাজপাখির মতো উড়ন্ত হেড দিয়ে গোল করেন ক্রোয়েশিয়ার রক্ষনভাগের খেলোয়াড় গুয়ার্দিওল। এই খেলোয়াড়কে এই বছরের বিশ্বকাপের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উঠতি ডিফেন্ডার বলে ধারনা করছেন ফুটবল বিশেষজ্ঞরা। 

{link}

তবে ক্রোয়েশিয়ার এই লিড বেশিক্ষন স্থায়ী হয়নি। ম্যাচের সময় ৯ মিনিট পেরিয়ে যাওয়ার আগেই সমতায় ফেরে মরোক্ক। সেটপিস থেকে ভাসানো বল জালে জড়িয়ে দেন আর্শাফ দারি। খেলা কার্যত শুরুতেই জমে ওঠে ম্যাচ। পুনরায় শুরু হয় আক্রমন প্রতি আক্রমনের লড়াই। দ্বিতীয়ার্ধ শেষ হওয়ার কিছু আগে ৪২ মিনিটের মাথায় গোল করেন ক্রোয়েশিয়ার ওরসিচ। বক্সের মধ্যে বল পেয়ে ডান পায়ের নিখুঁত শটে পরাস্ত করেন এই বিশ্বকাপে অনবদ্য ছন্দে থাকা ইয়াসিন বোনো কে। শেষ পর্যন্ত এই গোলটিই জয়সূচক গোল হয়ে যায়। দ্বিতীয়ার্ধে একাধিক সুযোগ পেলেও গোল করতে পারেনি মরোক্ক। শেষের দিকে একটি গোল অনবদ্য সেভ ফিয়ে আটকে দেন লুভাকোভিচ। ওয়ান ইসটু ওয়ানে এই গোলটি হয়ে গেলে স্কোরলাইন অন্য হলেও হতে পারত। কিন্তু গোলও হয়নি, স্কোরলাইনও পাল্টায়নি। 

ক্রোয়েশিয়ার এই কাতারের দৌড় স্মরনীয় হয়ে থাকবে লুকা মদ্রিচ ও ইভান পেরিসিচের মতো লেজেন্ডারি খেলোয়াড়দের জন্য। লুকা মদ্রিচের কার্যত এটাই শেষ বিশ্বকাপ। তিনি গোল করেন না, করান। মাঝমাঠে প্লে মেকিং, গোলের ফাইনাল পাস থেকে শুরু করে রক্ষনভাগের ভীত। সর্বক্ষেত্রেই অনবদ্য ভূমিকা এই খেলোয়াড়ের। বিদায়বেলায় চোখে জল এসেছিল বইকি, তবে আটকে রেখেছিলেন মনের জোর দিয়ে। কাতারের মঞ্চকে নিজের ফুটবলের সৌন্দর্য দিয়ে রাঙিয়ে দিয়ে গেলেন তিনি। অন্যদিকে আফ্রিকার দেশগুলির জন্য একটি অনুপ্রেরণা দিয়ে গেল মরোক্ক। তাদের কাছে এই পরাজয়েও যেন জয়ের গর্বের অধিষ্ঠান। 

{ads}

News FIFA World Cup Croatia Qatar sports সংবাদ

Last Updated :