header banner

মেসির রেকর্ডের দিনে নায়ক আলভারেজ, ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে ফাইনালে আর্জেন্টিনা

article banner

নিজস্ব সংবাদদাতা: ঘড়িতে ভারতীয় সময় রাত দুটো পেরিয়ে গেছে, একটা গোটা ফুটবলপ্রেমি কমিউনিটি তখনও হাঁ করে তাকিয়ে বসে। না ঘুম নেই চোখে, চলছে নিয়মিত রাত জাগা। আর কাতারের মঞ্চে এহেন অজস্র ফুটবলপ্রেমী মানুষদের রাত জাগা স্বার্থক করে তুলছেন লিওনেল মেসির মতো খেলোয়াড়েরা। ২০১৪ সালে ট্রফির সামনে দিয়ে ফিরে যেতে হয়েছিল। আজ আট বছর পর সেই মেসিই কার্যত মাঠে বিশ্বকাপের মঞ্চে নিজের দল নিয়ে ফিরে এসেছেন এক পন নিয়ে। বিশ্বজয়ের পন! আর্জেন্টিনার সম্পূর্ন দলও লড়ছে সেই দুর্দম্য হার না মানা লড়াই। সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধেও দূরন্ত মেসি! পুনরায় সেই চেনা খেলা আর চেনা প্রতিক্রিয়া, 'মেসি ম্যাজিক'।  সেই ম্যাজিক ও আর্জেন্টিনার অনবদ্য ফুটবলের সৌজন্যে ক্রোয়েশিয়াকে ৩-০ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপের ফাইনালে আর্জেন্টিনা। তবে এই ম্যাচে মেসির পাশাপাশি আরও এক নতুন নায়ক পেয়েছেন আর্জেন্টাইন সমর্থকেরা, জুলিয়ান আলভারেজ। এই ম্যাচে নিজে দুটি গোল করেছেন তিনি, এছাড়াও প্রথম গোলের পেনাল্টি পাওয়ার ক্ষেত্রেও প্রধান অবদান রিভার প্লেট থেকে উঠে আসা এই যুব প্রতিভারই। 

ম্যাচের উপসংহারে আর্জেন্টিনার জয়জয়াকার হলেও, প্রথমার্ধে শুরুতেই নিজেদের খেলায় বেশ চমকে দিয়েছিল ক্রোয়েশিয়া। যে ক্রোয়েশিয়া কে কাতারে ফুটবলপ্রেমীরা চিনেছে রক্ষনাত্মক ফুটবলের জন্য, সেই ক্রোয়েশিয়াই একটি হাই লাইন মেনটেইন করে খেলতে শুরু করে। তার সাথে ছিল হাই প্রেস ও বল পজিশন রাখার তাগিদ। বলে পা ছোঁয়াতে কিংবা বল পজিশন রাখতে কার্যত কালঘাম ছুটে যাচ্ছিল আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়দের। হয়ত ক্রোয়েশিয়ার থেকে এতো হাই প্রেসিং ফুটবল ডি পল, এনজো ফার্নান্ডেজরাও আশা করেননি। কিন্তু ওই যে, স্যাকরার ঠুক ঠাক, কামারের এক ঘা! ম্যাচের সময় তখন ৩৪ মিনিট। এনজো ফার্নান্ডেজ কার্যত বাজপাখির দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ মাঝমাঠ ও আক্রমনভাগকে বোকা বানিয়ে ক্রোয়েশিয়ার খেলোয়াড়দের মাথার উপর দিয়ে ফরোয়ার্ড বল বাড়ান জুলয়ান অ্যালভারেজ কে। বল পেয়ে গোলকিপারের উপর দিয়ে চিপ করার সময়েই তাকে ফাউল করেন লুভাকোভিচ। সেমিফাইনালের মতো বড়ো মঞ্চে পেনাল্টি থেকে গোল করতে ভুল করেননি মেসি। এক গোলে এগিয়ে যাওয়ার পরেই ম্যাচে নিজেদের ছন্দ ধরে ফেলে আর্জেন্টিনা। ৩৯ মিনিটে ফের সেই জুলিয়ান আলভারেজ। প্রতি আক্রমনে মেসির বাড়ানো বল নিয়ে কার্যত মাঝমাঠ থেকে নিজ দক্ষতায় ৪ জন ক্রোয়েশিয়ান ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বল জড়িয়ে দেন জালে। যদিও পরপর ভাগ্যও সাথ দিয়েছে এই যুব স্ট্রাইকারের। 

দ্বিতীয়ার্ধে শুরুতেই বেশ কয়েকটি পরিবর্তন করে ক্রোয়েশিয়া। ম্যাচে ফেরার মরিয়া চেষ্টা করতে থাকে লুকা মদ্রিচ রা। তবে প্রতি আক্রমনে প্রতিবারই ভয়ানক দেখাচ্ছিল আর্জেন্টিনাকে। তার সাথে চলছিল মজবুত রক্ষনের পরীক্ষা। ৬৯ মিনিট পুনরায় সেই মেসি, ক্রোয়েশিয়ার রক্ষনভাগের খেলোয়াড় গুয়ার্দিওল কে এই বছর বিশ্বকাপের রক্ষনের অন্যতম সেরা প্রতিভা বলে বর্নিত করা হয়েছে। কিন্তু মেসি সেই গুয়ার্দিওলকেই কার্যত ইনস্টেপ আউটস্টেপে বোকা বানিয়ে সোজা বক্সে ঢুকে গিয়ে ছবির মত একটি বল সাজিয়ে দেন আলভারেজ কে। এবারেও গোল করতে ভুল হয়নি তার। এহেন সোনার সুযোগ কেই বা ছাড়ে! ম্যাচ শেষে পরিবর্ত হিসেবে কাতারে প্রথমবার আর্জেন্টিনার হয়ে মাঠে নামেন হুয়ান ফয়েত, পাউলো দিবালা ও পালাসিয়োস। খেলা শেষ হয় ৩-০ ফলাফলেই। 

আজ সারা বিশ্ব তাকিয়ে ছিল দুই এলএমটেন-এর দিকে। একজন লিওনেল মেসি, আর একজন লুকা মড্রিচ। ক্রোয়েশিয়ার লেজেন্ড এই খেলোয়াড় দেশের হয়ে শেষ ম্যাচ খেললেন এই সেমিফাইনালে। দল কে শেষবার ফাইনালের পর এবার পৌঁছে দিয়েছেন সেমিফাইনালের দোরগোড়াতেও। তার বিদায়ে স্টেডিয়াম জুড়ে ওঠে হাততালি, রেস্পেক্টর করতালি। ক্রোয়েশিয়ার এই দৌড়ও কাতারে লেখা থাকবে সোনালী ইতিহাসে। অন্যদিকে নিজেদের স্বপ্ন কে বাস্তব করে তোলার পথে মাত্র আর এক ধাপ পিছনে মেসি ও আর্জেন্টিনা। 

News Football FIFA World Cup Argentina Messi সংবাদ

Last Updated :

Related Article

Care and Cure 1

Latest Article