তথাগত ঘোষ: ঠিক যেন ইডেনে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে হওয়া টেস্টের পুনরাবৃত্তি। অ্যাসেজ সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম দিনেও পার্থে চোখে পড়ল একই ছবি। সম্পূর্ণ দিন জুড়ে বোলারদের দাপট। পিচে দাঁড়িয়ে কার্যত নাজেহাল ব্যাটসম্যানরা। একদিকে অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক তো অন্যদিকে জোফরা আর্চার, পেশারদের দাপটে ক্রিজে দাঁড়াতেই পারলেন না দুই পক্ষের কোনও ব্যাটসম্যানরা। পার্থের পিচে প্রথমে ব্যাট করে ইংল্যান্ডের ইনিংস শেষ হয় ১৭২ রানে। অপরদিকে, ইংল্যান্ডের এই রানের জবাবে দিনশেষে 9 উইকেট হারিয়ে ১২৩ রানে ধুঁকছে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে আগুন ঝরিয়েছেন Mitchell Starc, প্রথম দিনে তাঁর ঝুলিতে গিয়েছে ৭ টি উইকেট। অপরদিকে, ইংল্যান্ডের হয়ে দুরন্ত বোলিংয়ে পাল্টা ৫ উইকেট তুলে নিয়েছেন বেন স্টোকস। প্রথম দিনের শেষে পাল্লা ভারি রয়েছে ইংল্যান্ডের দিকেই।
{link}
শুক্রবার সকালে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বেন স্টোকস। কিন্তু, ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের জন্য আজকের দিনটি খুব একটা সুখকর হয়নি। পার্থ মানেই ২২ গজে দুরন্ত গতি সঙ্গে থাকে সুইং ও বাউন্স। শুক্রবারও এই ত্রিফলাতেই ব্যাটসম্যানদের নাজেহাল করে ছাড়লেন বোলাররা। মিচেল স্টার্ক ও ব্রেন্ডন ডাকেটের জুটি সকাল থেকে পিচে আগুন ঝরাতে শুরু করে। প্রথম ওভারেই শূন্য রানে জ্যাক ক্রলির উইকেট তুলে নেন স্টার্ক। প্রথম ইনিংসে তাঁর দখলে যায় ৭ টি উইকেট। দুটি উইকেট পেয়েছেন ব্রেন্ডন ডগেট ও একটি গিয়েছে ক্যামেরন গ্রিনের দখলে। স্টার্কের ৫৮ রানের বিনিময়ে ৭ উইকেটের স্পেলটি অ্যাসেজের অন্যতম সেরা বোলিং স্পেলগুলির মধ্যে একটি হয়ে উঠেছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বাধিক রান হ্যারি ব্রুকের ৫২(৬১)। এছাড়াও ৪৬(৫৮) রানের ইনিংস খেলেছেন ওলি পোপ। বেন ডাকেট ও জেমি স্মিথ করেছেন ২১(২০) এবং ৩৩(২২) রান।
{link}
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ডের মতোই একই অবস্থা হয় অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের। শূন্য রানে ফিরে যান ওপেনার জেক ওয়েথার্ল্ড। বেন স্টোকস একাই ২৫ রানের বিনিময়ে ৫ উইকেট তুলে নিয়েছেন। অপরদিকে জোফরা আর্চারের দখলে ১১ রানের বিনিময়ে দুই উইকেট। দিনশেষে ৯ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার রান মাত্র ১২৩। দেড়শো রানের গণ্ডি টপকানো অজিদের কাছে কার্যত অসম্ভব মনে হচ্ছে!
পার্থে দিনের শুরুতে ইংল্যান্ডকেই কোনঠাসা দেখাচ্ছিল। কিন্তু, দিনের শেষে সেই চিত্র পাল্টে গিয়েছে। প্রথম দিনের শেষে চাপে রইল অস্ট্রেলিয়াই। সৌজন্যে সেই ইংল্যান্ডের কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালামের ব্যাজবল!
{link}
ইংল্যান্ড তাদের অগ্রাসী মনোভাবের ব্যাটিংয়ের কারণেই দিনশেষে লড়াইয়ে এগিয়ে। ইংল্যান্ডের ব্যাটাররা যে গতিতে রান তুলেছেন, সেই তুলনায় লড়াই পিছিয়ে গিয়েছেন অজিরা। দিনের বাকি সময় লড়াই হয়েছে সেয়ানে-সেয়ানেই এদিন ক্রিজে বোলারদের যে ধরণের দাপট দেখতে পাওয়া গিয়েছে, সেই হিসাবে দুই দিনেই টেস্ট শেষ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে স্পষ্টভাবেই পার্থের পিচ নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে ক্রিকেট মহলে। কারণ, ইডেনে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট আড়াই দিনে শেষ হয়ে যাওয়ার কারনে তা নিয়েও বিস্তর সমালোচনা হয়েছে।
{ads}