নিজস্ব সংবাদদাতা: নিম্নচাপের কারনে কলকাতা সহ পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে আবহাওয়া খারাপ দুপুর থেকেই। রাতেও তার ব্যাতিক্রম হয়নি। ঘড়ির কাঁটা দশটা পেরিয়েছে তখন। বেঙ্গালুরুর পাবলো পেরেজে-এর শট বারের উপর দিয়ে উড়ে জেতেই শোনা গেল এদিক ওদিক থেকে মোগনবাগান সমর্থকদের গলা ফাটানো উল্লাস। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই একের পর এক বাইক ছুটে চলেছে রাস্তা দিয়ে, উড়তে শুরু করেছে সবুজ মেরুন আবির। গোয়ায় টাইব্রেকারে বেঙ্গালুরু কে হারিয়ে কলকাতায় ট্রফি নিয়ে আগামীকাল ফিরতে চলেছে মোহনবাগান। ফের একবার ভারতসেরা সবুজ মেরুনের তরী। শনিবার রাতে নির্ধারিত সময় শেষে ২-২ স্কোরে শেষ হয় খেলা। খেলা গড়ায় ট্রাইব্রেকারে। ভিশাল কাইথ, সেমিফাইনালের পর এবার ফাইনালেও। আইএসএল-এর বেস্ট গোলকিপারের হাতেই থামল বেঙ্গালুরুর ১৩ ম্যাচের আনবিটেন রান৷ গোয়ার সমুদ্রসৈকতে ফাইনাল জিতে ভারতসেরা মোহনবাগান।
শনিবার শুরু থেকেই উত্তাজনা চোখে পড়ছিল এই হাইভোল্টেজ ফাইনালে। যদিও ফাইনালে নির্ধারিত সময়ের ৪টি গোলের ৩টিই হয়েছে পেনাল্টিতে। ১৪ মিনিটের মাথায় প্রথম পেনাল্টি পায় এটিকে মোহনবাগান। সৌজন্যে একসময়ের সবুজ মেরুন সমর্থকদের নয়নের মনি রয় কৃষ্ণা। কর্নার থেকে আসা বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে হাতে লাগিয়ে বসেন কৃষ্ণা। রেফারির চোখে তা ধরা পড়ে যায়। গোল করতে ভুল করেননি পেত্রাতোস। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার কিছু আগেই প্রিতম কোটাল বল ক্লিয়ার করার সময় বল ছিনিয়ে নেন রয় কৃষ্ণা। পেনাল্টি না পেয়ে ফুঁসে ওঠেন বেঙ্গালুরুর খেলোয়াড়েরা। কিন্তু কার্যত সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে শুভাশিস বোস-এর সাথে, এবার পেনাল্টি দিয়ে দেন রেফারি। গোল করতে ভুল করেননি সুনীল ছেত্রী। প্রথমার্ধ শেষ হয় ১-১ স্কোরলাইনে।
দ্বিতীয়ার্ধে দুরন্ত খেলতে থাকা আশিক কুরুনিয়ান কে তুলে নেন মোহনবাগান কোচ ফেরান্দো। ৭৮ মিনিটে ম্যাচে নিজের করা ভুলের শাপমোচন করেন রয় কৃষ্ণা। কর্নার থেকে আসা বল গোলের লাইনের ওপারে হেড দিয়ে জালে জড়িয়ে দেন কৃষ্ণা। মোহনবাগানের দরজায় তখন কড়া নাড়ছিল ফাইনালে হারের ভয়। কিন্তু খেলার ভাগ্য বদলে দেন পরিবর্ত হিসেবে নামা কিয়ান নাসিরি। বিতর্কিত হলেও দল কে পেনাল্টি পাইয়ে দেন তিনি। গোল করে দল কে সমতায় ফেরান সেই পেত্রাতোস। আজ আর একটি গোল করলে গোল্ডেন বলটিও নিজের নামে করে নিতে পারতেন এই অস্ট্রেলিয় স্ট্রাইকার। নির্ধারিত সময় আর গোল না হওয়ায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। অতিরিক্ত সময়ের খেলাতেও স্কোরলাইন থাকে ২-২। টাইব্রেকারে ভিশাল কাইথের হাতে আটকে যায় বেঙ্গালুরুর রক্ষনভাগের খেলোয়াড় ব্রুনো রামিরেজ-এর শট। পাবলো পেরেজের শট ক্রসবারের উপর দিয়ে উড়ে যাওয়াই নিশ্চিত করে দেয়, আইএসএলের ট্রফি আসতে চলেছে সবুজ মেরুন তাঁবুতে।
{ads}