header banner

'জোগা বেনিতো' সাম্বা ছন্দে আত্মসমর্পণ কোরিয়ার, দাপুটে জয়ের সৌজন্যে কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিল

article banner

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ সারা বিশ্ব জুড়ে, এমনকি সাউথ আমেরিকায় দেশের মাঠি ছাড়িয়ে সুদূর এশীয় দেশ ভারতবর্ষের কোন এক প্রান্তের শহরে কলকাতার ওলিতে গলিতে পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে ব্রাজিলের এতো বিপুল পরিমান সমর্থক। যদি প্রশ্ন ওঠে কেন? তবে সেই উত্তর কোরিয়া রিপাবলিকের বিরুদ্ধে মাঠেই দিয়ে দিয়েছে ব্রাজিল। 'জোগা বনিতো' ব্রাজিলিয় ভাষায় যে শব্দ দুটির অর্থ সুন্দর ফুটবল, সেই ছবিই আজ মাঠে তুলে ধরেছেন নেইমারেরা। সেই সাম্বা ম্যাজিকে সবুজ হলুদ ঝড়ে কাবু কোরিয়া রিপাবলিক৷ প্রথমার্ধেই চারটি গোল করে ফেলে তিতের দল৷ দ্বিতীয়ার্ধে একটি গোল পরিশোধ করলে খেলা শেষ হয় ৪-১ স্কোরলাইনে। কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার মুখোমুখি হবে ব্রাজিল। 

শেষ ম্যাচে ক্যামেরুনের কাছে পরাজয়ের পর আজ ব্রাজিল যে কিছুটা আহত বাঘের মতো হিংস্র মেজাজে শুরু করবে তা ধারনা করেছিলেন অনেকেই। কিন্তু সেই খোঁচা খাওয়া মনোভাব যে এতো ভয়ানক হবে, তা হয়ত কেউ ভাবেননি। আজ ক্যামেরুনের ম্যাচের একাদশের থেকে ১০ জন পরিবর্তিত হয়। এদের মিলিতাও ছাড়া সকলেই নতুন। ম্যাচের শুরুতেই ৭ মিনিটের মাথায় প্রথম গোল করেন ভিসিসিয়াস জুনিয়ার। রাফিনহার ডান প্রান্ত থেকে বাড়ানো বল নিখুঁত প্লেসমেন্ট করে ঠান্ডা মাথায় জড়িয়ে দেন জালে। দ্বিতীয় গোল হয় পেনাল্টিতে। চোট সারিয়ে ফিরে গোল করেন নেইমার। শুরু হয় সাম্বা ছন্দের নাচ। যে নাচ প্রথমার্ধে আর থামেনি। 

{link}

২৯ মিনিটের মাথায় তৃতীয় গোল করে তিতের দল। দুর্দান্ত স্কিল দেখালেন রিচার্লিসন। মাথায় বল নিয়ে জাগলিং করে সঙ্গে সঙ্গে পাস দেন মার্কুইনোসকে। তিনি পাস দেন থিয়াগো সিলভাকে। থিয়াগোর ঠিকানা লেখা পাস জমা পড়ে রিচার্লিসনের পায়ে। বাঁ পায়ে গোল করেন রিচার্লিসন। বিশ্বকাপে তৃতীয় গোল হল তাঁর। ব্রাজিলিও যে জিঙ্গা স্টাইল বিখ্যাত, সেই ভিন্টেজ জিঙ্গা স্টাইল দেখা যায় রিচার্লসনের খেলায়। কার্যত ক্যানভাসে সুন্দর তুলিরে ছোঁয়ায় আঁকা অপরূপ শিল্পের মতো ফুটবল খেলতে শুরু করে ব্রাজিল। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগে আরও একটি গোল করেন লুকাস প্যাকুয়েতা। প্রথমার্ধ শেষ হয় ৪-০ ফলাফলে। 

দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা রক্ষনাত্মক খেলতে শুরু করে ব্রাজিল। কমে আসে আক্রমনের ধার। দলের পরিবর্তন দেখেই তিতের স্ট্র‍্যাটেজি স্পষ্ট হয়ে যায়।৭৫ মিনিটের মাথায় এক গোল শোধ দেয় দক্ষিণ কোরিয়া। ফ্রিকিক থেকে বল ক্লিয়ার করেছিলেন ব্রাজিলের ডিফেন্ডার। সেই বল সুন্দর রিসিভ করে বাঁ পায়ের জোরালো শটে গোল পাইক সিউং হো। প্রথমার্ধে কোরিয়াকে খুঁজে পাওয়া না গেলেও দ্বিতীয়ার্ধে বরং তাঁদের খেলা অনেক বেশি ছন্দবদ্ধ। অনেক বার আক্রমণে উঠে এসেছে তারা। কপাল ভাল থাকলে আর একটা গোল পেয়ে যেতে পারত। ব্রাজিলও অনেকটা গা ছাড়া মনোভাব নিয়ে খেলে। নেমার-সহ অনেক ফুটবলারকে বদলে দেন তিতে। এমনকি, তৃতীয় গোলকিপার ওয়েভারটনকেও নামিয়ে দেন তিনি। ব্রাজিল দলের সমস্ত খেলোয়াড়কেই এবার মাঠে নামালেন ব্রাজিলের কোচ, ২৬ জন কেই করে দিলেন খেলার সুযোগ। কার্যত স্বাচ্ছন্দ্যের সাথেই কোয়ার্টার ফাইনালে উঠল ব্রাজিল।

অন্যদিকে একই দিনে জাপানের পর স্বপ্নভঙ্গ হল আরও এক এশিয় দেশ কোরিয়া রিপাবলিকের। জাপান ও কোরিয়া, উভয়েই একাধিক অঘটন ঘটিয়ে শেষ ১৬ তে উঠলেও তার পরবর্তী পর্যায়ে যেতে ব্যর্থ। আজ প্রথমার্ধে কার্যত ব্রাজিলের আক্রমনের সামনে তাসের পাতার মতো উড়ে যায় কোরিয়ার রক্ষনভাগ। সেইভাবে ব্রাজিলকে চ্যালেঞ্জই করতে পারেনি কোরিয়া। তবে বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথমবার শেষ ১৬-এ খেলার স্মৃতি সাথে করে নিয়ে যাচ্ছে সাং হুন মিং রা। 

{ads}

News football Sports FIFA World Cup Brazil সংবাদ

Last Updated :