একটা পদক্ষেপ, যা থেকে বদলে যেতে পারে সমগ্র বিশ্বের ফুটবলের চিত্র। বিপ্লব নাকি বিদ্রোহ? না স্পষ্ট নয় প্রশ্নের উত্তর। উয়েফা চ্যাম্পিয়ান্স লিগ, ক্লাব ফুটবলের এতো বছর ধরে চলে আসা শ্রেষ্ঠ প্রতিযোগিতা। সেই উয়েফার বিরুদ্ধেই কার্যত সরাসরি যুদ্ধ শুরু করে দিল ইউরোপের অন্যতম সেরা ১২টি ফুটবল ক্লাব। পরের মরশুম থেকে তারা আর উয়েফা চ্যাম্পিয়ান্স লিগে খেলবে না, নিজেদের মতো করে নতুন ফরম্যাটে ইউরোপিয়ান সুপার লিগ গঠনের কথা ঘোষণা করে দিল এই ক্লাবগুলি। লক্ষ্যে আরও বেশি অর্থ রোজগার। তবে কি শেষ পর্যন্ত এতো বছরের বিশ্বব্যাপি ফুটবল ও ফুটবলের এই প্রতিযোগীতাকে ঘিরে ভক্তদের আবেগ ম্লান হয়ে পড়বে অর্থের সামনে?
{link}
নিজেদের মতো করে সুপার ক্লাব প্রতিযোগীতার আয়োজন করার জন্য যে সকল ক্লাব এই নতুন লিগে যোগ দিচ্ছে তারা হল, রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা, অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ, ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড, লিভারপুল, চেলসি, ম্যাঞ্চেস্টার সিটি, আর্সেনাল, টটেনহ্যাম হটস্পার, এসি মিলান, ইন্টার মিলান এবং জুভেন্তাস। সবকটি ক্লাবেরই বিশ্বব্যাপি খ্যাতি এবং প্রথম সারিতে নাম রয়েছে। এই ১২টি ক্লাব ইউরোপের সেরা আরও ৩টি ক্লাবকে সুপার কাপের অংশীদার হিসেবে গ্রহণ করবে। অর্থাৎ সুপার কাপের মোট সদস্য দল হতে চলেছে ১৫। এর বাইরে সেরার সেরা আরও ৫টি দলকে আমন্ত্রণ জানিয়ে আগামী মরশুম থেকে ২০টি দলের পৃথক একটি লিগের আয়োজন করা হবে। ১৫টি সদস্য ক্লাব প্রতিবছর এই টুর্নামেন্ট খেলবে। তার সঙ্গে পারফরম্যান্সের নিরিখে প্রতিবছর বদল হবে শেষ ৫টি দল। খেলা হবে লিগ ফরম্যাটে। লিগের শেষ নকআউট ফরম্যাটে বেছে নেওয়া হবে সেরা দলকে।
কিন্তু এই টুর্নামেন্ট শুরু হলে কার্যত জৌলুসহীন হয়ে পড়বে উয়েফা চ্যাম্পিয়ান্স লিগ। এতো বছরের ঐতিহ্যবাহী ফুটবল প্রতিযোগিতা শেষে হার মেনে যাবে অর্থের সামনে? প্রথম সারির ক্লাবগুলি না খেললে এই মেগা টুর্নামেন্ট দর্শক সংখ্যা এবং টেলিভিশন ভিউয়ারশিপ দুইয়ের নিরিখেই কার্যত তলানিতে ঠেকে যাবে। তাই সুপার লিগের এই পরিকল্পনার তীব্র বিরোধিতা করেছে উয়েফা। এমনকী, যে সমস্ত ক্লাব এবং ফুটবলার এই লিগে খেলবে তাঁদের উয়েফা এবং ফিফার সব প্রতিযোগিতা থেকে নির্বাসিত করা হতে পারে বলেও জানিয়ে দিয়েছে তারা। যার অর্থ এই লিগে অংশগ্রহণ করলে মেসি-রোনাল্ডোর মতো খেলোয়াড়রা ফুটবল বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ নাও পেতে পারেন। যদিও, লিগের উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, তাঁরা উয়েফা এবং ফিফার সমর্থন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। আর যদি তা না হয় তাহলে হয়ত, তাহলে ভবিষ্যতে পৃথক বিশ্বকাপেরও আয়োজনও হতে পারে।
{link}
সবশেষে এখানে বর্তমানে ফুটবল ক্লাবগুলির এই সিদ্ধান্ত গভীরভাবে আঘাত করেছে বিশ্বব্যাপি ফুটবলপ্রেমীদের হৃদয়ে। সামনে যে এক বৃহত্তর লড়াই আসন্ন একথা স্পষ্ট। এখন শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি কোণ দিকে গড়ায় তাই দেখবার বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। কিন্তু এককথায় কোন ফুটবল সমর্থকই এই ঐতিহ্যবাহী টুর্নামেন্টগুলির পরিবর্তে এক নতুন টুর্নামেন্ট কে সহজে বরন করে নেবে না। এক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপি ফুটবল ভক্তদের হয়ত তাদের পাশে পাবে ফিফা ও উয়েফা। সামনে বৃহত্তর লড়াই…
{ads}