কলকাতার মাঠের ডার্বি মানেই উচ্চ-রক্তচাপ, মাঠের ভিতরের সাথে সাথেই মাঠের বাইরেও সমর্থকদের লড়াই। কলকাতার বুকে ধীরে ধীরে ডার্বির আসার সময় হলেই শুরু হয় এক উৎসবের, যে উৎসবে সামিল হন ছোট থেকে বড়ো সবাই। একটা নব্বই মিনিটের ফুটবল মাঠের লড়াই দুইভাগে ভাগ করে দেয় সারা বাঙালি সমাজকে। লড়াইটা শুধু ফুটবলের নয়, লড়াইটা আবেগের, লড়াইটা ঐতিহ্যের, লড়াইটা সন্মানের, লড়াইটা মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলের। আজ সেই ঐতিহ্যবাহী লড়াই, আজ মরশুমের প্রথম ডার্বি।
{link}
ডার্বির দিন কলকাতার বুকের ছবিটাই যেন পালটে যায় এল লহমায়, সারাবছর খেলা না দেখা ছেলেটাও মেতে ওঠে ফুটবল উন্মাদনায়। কিন্তু শেষ দুবছর অনেকটাই পাল্টেছে ছবিটা। মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গল দুই দলই খেলা শুরু করেছে দেশের সর্বোচ্চ লিগ আইএসএল-এ। মোহনবাগান হয়েছে এটিকে মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গল হয়েছ এসসি ইস্টবেঙ্গল। যে যুবভারতি ক্রীড়াঙ্গন ডার্বির দিনে মুখরিত হয়ে উঠত কোভিডের কারনে তা এবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে গোয়ার মাটিতে, তাও আবার জনশূন্য স্টেডিয়ামে। ক্রিকেটের মাঠে দর্শক প্রবেশের অনুমতি মিললেও ফুটবল মাঠে এখনও তা মেলেনি ভারতে। সেই কারনে ডার্বির সেই আবহ থেকেও যেন নেই। একাধিক বিজ্ঞাপন পোস্টার সব থাকলেও কোথাও একটা যেন শূন্যতা রয়েছেই। অন্যদিকে মোহনবাগান সমর্থকেরাও বর্তমানে দুইভাগে বিভিক্ত। একটা বড়ো অংশের সমর্থক ‘রিমুভ এটিকে’ স্লোগান নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। যদিও দলকে এহেন হাইভোল্টেজ ম্যাচে তারাও সমর্থন করবেন বটে।
{link}
সবমিলিয়ে এই সবকিছু নিয়েই আজ শতবর্ষের ডার্বি। গোয়ার ময়দানে মুখোমুখি লড়াইয়ে নামবে ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান। হাবাসের এটিকে মোহনবাগান এখন দুরন্ত ছন্দে রয়েছে, প্রথম ম্যাচে কেরালাকে পরাজিত করে দুরন্ত শুরু করেছে তারা। অন্যদিকে জামশেদপুরের বিরুদ্ধে ড্র দিয়ে নিজেদের লড়াই শুরু করেছে ইস্টবেঙ্গল। দুই কোচই আত্মবিশ্বাসী। কিন্তু কোথাও গিয়ে কলকাতা ময়দানের ডার্বির স্বাদ তাদের আজও অজানা। এটিকে মোহনবাগানের কয়েকজন খেলোয়াড়ের যদিও এই অভিজ্ঞতা রয়েছে। বাড়ির টিভির সামনেই আজ লাখ লাখ সমর্থকরা বসবেন ডার্বির উত্তেজনা ভাগ করে নিতে। শেষ পর্যন্ত ডার্বির রং লাল হলুদ হয় নাকি সবুজ মেরুন, তাই দেখার। সবশেষে প্রশ্ন একটাই, শেষ পর্যন্ত ব্যানিজ্যিক স্বার্থে কোথাও গিয়ে আমরা নিজের ঐতিহ্য কে হারিয়ে ফেলছিনা তো?
{ads}