গমের ক্ষেত ঘিরে রাখা বৈদ্যুতিক তারে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল একটি ষাঁড় ও সাতটি শেয়ালের। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ থানার ধনকৈল গ্রামপঞ্চায়েতের দূর্গাপুর ঝাড়পাড়া এলাকায়। ঘটনার পর থেকেই পলাতক ওই গমের জমির মালিক সুমন রায় ও ভদ্র রায়। ঘটনার খবর পেয়ে ঝাড়পাড়া গ্রামে ছুটে আসে কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ ও উত্তর দিনাজপুর পিউপিলস ফর অ্যানিমেলস এর সদস্যরা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কালিয়াগঞ্জ থানায় জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করেছে পশুপ্রেমী সংস্থা উত্তর দিনাজপুর পিউপিলস ফর অ্যানিমেলস। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কালিয়াগঞ্জ থানার ধনকৈল গ্রামপঞ্চায়েতের দূর্গাপুর ঝাড়পাড়া গ্রামের বাসিন্দা সুমন রায় ও ভদ্র রায় তাদের জমির ফসল গম রক্ষা করার জন্য জমির চারিদিক দিয়ে ইলেক্ট্রিকের তার দিয়ে ঘিরে দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ করে দেয়। যাতে কোনও গবাদি পশু বা মানুষ গমের ক্ষতি করতে না পারে। বুধবার রাতে সেই গমের ক্ষেতে ঢুকতে গিয়ে একটি ষাঁড় সহ ৭ টি শেয়াল বিদ্যুৎ পৃষ্ট হয়ে মারা যায়। মৃত পশুগুলিকে মাটি চাপা দিয়ে ঘটনার ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন অভিযুক্ত দুজন। ঘটনা টের পেয়েই গ্রামের বাসিন্দারা খবর দেন কালিয়াগঞ্জ পুলিশ এবং পশুপ্রেমী সংস্থাকে। সকালেই ঘটনাস্থলে ছুটে আসে কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ ও পশুপ্রেমী সংস্থা উত্তর দিনাজপুর পিউপিলস ফর অ্যানিমেলস এর সদস্যরা। পশুপ্রেমী সংস্থার পক্ষ থেকে ১৯৭২ সালে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন , ৪২৮ আইপিসি ধারা অনুযায়ী পশু ক্লেশ নিবারনী আইন ১৯৬০ এবং সম্পূর্ণ অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যাবহারের অভিযোগ জানিয়ে কালিয়াগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করে পশু প্রেমী সংস্থা উত্তর দিনাজপুর পিউপিলস ফর অ্যানিমেলস। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত সুমন রায় ও ভদ্র রায় গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। মৃত পশুগুলির ময়নাতদন্তের জন্য কালিয়াগঞ্জ পশু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জঙ্গল কেটে সাফ করে দেওয়া হচ্ছে যান্ত্রিক সভ্যতার উন্নয়নের জন্য ফলে বন্য প্রাণীরা প্রায় জঙ্গল থেকে বেরিয়ে হানা দিচ্ছে পার্শ্ববর্তী গ্রাম গুলিতে। প্রায়ই অধিকাংশ সময় শোনা যায় হাতির দল ঢুকে পড়ছে গ্রামে, নষ্ট করে দিচ্ছে শস্য খেত, ঠিক তেমনি খাদ্যের আকালের ফলে শেয়াল গুল হানা দেয় কিন্তু তা বলে তাদের মৃত্যু উপাহারও প্রাপ্য ছিলোনা। শুধু পশুরা এসে খেত নষ্ট করে দিচ্ছে বলে বৈদ্যুতিক সংযোগ রাখবে, এই ব্যাবস্থা ডেকে আনতে পারতো আরও ভয়ানক বিপদ। কোন মানুষ, বা বাচ্চারা খেলতে খেলতে ঢুকে যেতেই পারতো। জ্ঞানের অভাবতো বটেই এবং শুধুমাত্র নিজের স্বার্থসিদ্ধির কথাই তারা ভেবেছে। ধৃত জমির মালিকরা যেন শীঘ্রই ধরা পরে এবং তাদের উপযুক্ত শাস্তি প্রাপ্য হয়। ইতিমধ্যে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ।
{ads}