header banner

দক্ষিণ ২৪ পরগনায় আজও চৈত্র সংক্রান্তিতে শিবের গাজনের মাধ্যমে বাঙালির বর্ষবরণ

article banner

সুদেষ্ণা মন্ডল , দক্ষিণ ২৪ পরগনা: শুক্রবার চৈত্র সংক্রান্তি। অর্থাৎ বাংলা ক্যালেন্ডার-এর বর্ষপূর্তি। শনিবার থেকে শুরু হবে বাংলার ক্যালেন্ডারের নতুন অধ্যায়। বাংলা সালের বর্ষপুর্তি হয় বাঙালির সাবেকী আনায়। বাংলা নববর্ষের মধ্য দিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নেবে আপামর বাঙালি। সামনে আসছে আরও একটা নতুন বছর। আর এই বছরের আগে আমরা সবাই জানি, চৈত্র মাস। এই চৈত্র মাস নববর্ষের আগে আজও গ্রাম বাংলার গাজন গানের মধ্য দিয়ে মেতে ওঠে গ্রাম বাংলা। তবে সেভাবে আর আগের মত গ্রামে গাজন উৎসব দেখা যায় না। তবে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বেশ কিছু এলাকায় আজও সেই রীতিতে চৈত্রের শেষে গাজন উৎসবের দেখা মেলে। তবে বাংলার লোকসংস্কৃতির মধ্যে গাজন উৎসব অন্যতম। আধুনিকতার যুগে সেই পুরানো প্রাচীন সংস্কৃতি এখন অবলুপ্তের পথে। এই গাজন উৎসব চৈত্রের শেষে বৈশাখের আগে গ্রামবাংলায় শুরু হয় গাজন গান। নানান নাচ গানে জমিয়ে দেন শিল্পীরা বিভিন্ন সাজ পোশাকের মাধ্যমে মেতে ওঠেন শিল্পীরা। চৈত্র সংক্রান্তির গাজন মূলত শিব ঠাকুর কে ঘিরেই তাই চলতি ভাষায় গ্রাম বাংলার মানুষরা একে চইতে গাজন বলে অভিহিত করেছে। বিভিন্ন গ্রামের মানুষরা এই কাজের সঙ্গে এই কটা দিন অন্য কাজ ভুলে এই কাজেই লিপ্ত হয়। চৈত্রের শুরু থেকেই চলে প্রস্তুতি। সাধারণত শিবকে নিয়েই বানানো হয় নানান ধরনের গান। নানান সাজে সেই গান পরিবেশন করেই মানুষের মধ্যে আনন্দ দিয়ে থাকে।  
{link}
তবে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর থানা এলাকার শাহজাদাপুরে এই টানা তিন দিন ধরে চলবে এই ধরনের গাজন গান। দিনে দিনে সংখ্যাটা অনেক কমে আসছে। গ্রামের পিছিয়ে পড়া প্রান্তিক মানুষরাই মূলত গাজন গান কে কেন্দ্র করে শিবকে উপাসনা করেন। এক গাজন শিল্পী অরূপ নস্কর বলেন, “বছরের অন্যান্য দিনগুলিতে দিনমজুরের কাজ করলেও বছরের শেষ চারটে দিন বিশেষ করে ছুটি নিয়ে আমি ছুটে আসি গাজন করতে। বাংলার ঐতিহ্য সংস্কৃতি থেকে গাজন গান ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। বাংলার শিল্প ও সংস্কৃতিতে সাহেবী ছোঁয়া ধীরে ধীরে ধরা পড়ছে। আমরা গাজনকে বাঁচিয়ে রাখা জন্য লড়াই চালিয়ে যাব।“ বাসুদেব মুখার্জি, গাজন শিল্পী, তিনি বলেন, “টানা ২০ বছর ধরে আমি এই গাজনের সঙ্গে যুক্ত। বছরের এই চারটে দিন আমি খুব আনন্দে কাটাই। গাজনের অভিনয় করার মাধ্যমে আমি মানসিক শান্তি খুঁজে পাই। সারাবছর মাঠে-ঘাটে কাজ করলেও বছরের এই চারটে দিন ছুটি নিয়ে গাজন দলের নাম লেখায়। দক্ষিণ ২৪ পরগনা বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে ঘুরে আমরা শিবের গাজন গাই। চৈত্র সংক্রান্তি থেকে এই শিবের গাজন শুরু হয় জলে টানা তিন চার দিন ধরে।“ ইংরেজি নিউ ইয়ারের মতন বাংলার নববর্ষ কে স্বাগত জানাতে প্রাচীনকাল ধরে চলে আসছে এই গাজনের রীতিনীতি। বাংলার লোকসংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে শিবের গাজন। হারিয়ে যাওয়া লোকসংস্কৃতিকে আবারো বাঁচিয়ে তোলার কদম্ব লড়াই চালাচ্ছে গাজন শিল্পীরা।
{ads}

south 24 Parganas West Bengal Bengali New Year News সংবাদ

Last Updated :