সুদেষ্ণা মন্ডল, দক্ষিন ২৪ পরগনা: একটু একটু করে এগিয়ে আসছে হুগলি নদী, ধীরে ধীরে ভাঙছে নদী বাঁধ। নদীগর্ভে তলিয়ে যেতে বসেছে আস্ত একটা গ্রাম। আতঙ্কে দিন গুনছেন দক্ষিন ২৪ পরগনার ফলতা বিধানসভার তারাগঞ্জ জেলেপাড়ার কয়েকহাজার বাসিন্দা। ফলতার পাশ থেকে বয়ে গেছে হুগলি নদী। নদী ভাঙ্গনের জেরে একের পর এক জমি চলে গেছে হুগলি নদীগর্ভে। নদী বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় বর্তমানে বেহাল অবস্থা ফলতা বিধানসভার নদী তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকায়। এরইমধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা ফলতার তারাগঞ্জ গ্রামের। গ্রামের মধ্যে অবস্থিত তারাগঞ্জ জেলেপাড়া শিশু শিক্ষা কেন্দ্র। বিদ্যালয়টি একেবারে হুগলি নদী তীরবর্তী বাঁধ এলাকায়।নদী বাঁধ ভাঙতে ভাঙতে পৌঁছে গেছে গ্রামের সীমানায়। জেলেপাড়ার সীমানাতে রয়েছে গ্রামের শিশু শিক্ষা কেন্দ্র যেখানে এলাকার শতাধিক ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনা করে। নদী বাঁধ ভেঙে যেকোনো মুহূর্তে তারাগঞ্জ জেলেপাড়া শিশু শিক্ষা কেন্দ্র টি তলিয়ে যেতে পারে নদীগর্ভে। তাই ঝুঁকি নিয়েই নিত্যদিন চলে স্কুলের পঠন পাঠন।
{link}
এই প্রসঙ্গে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা জানান, ভরা কোটালের জোয়ার এমনকি নদী থেকে জাহাজ গেলেই জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয় এলাকা। সেই সময় ছাত্রছাত্রীদের কে নিয়ে স্কুলের দোতালায় পঠন পাঠনের কাজ করতে হয়। নিজেদের সমস্যার কথা জানিয়ে একাধিকবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হন তারা। কিন্তু আজ পর্যন্ত নদী বাঁধ মেরামতের কোনো কাজ হয়নি বলে দাবি করেন তিনি। অন্যদিকে গ্রামের বাসিন্দারা জানান, ভোট আসে ভোট যায় গ্রামে জনপ্রতিনিধিরা আসেন কিন্তু তাদের সমস্যার কথা শুনলেও আজও কোনো সমাধান হয়নি। নদী বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় হুগলি নদী থেকে যখন জাহাজ যাতায়াত করে সেই সময়ে জলোচ্ছ্বাসে বাংলা দুঃখের জল চলে আসে এলাকায়। এমনকি ভরা কোটালেও আতঙ্কে থাকেন তারাগঞ্জ এলাকার বাসিন্দারা। নদীর নোনা জল ঢুকে পরে এলাকায় তখন ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিতে হয় অন্যত্র।
অবশ্য নদীভাঙ্গন নিয়ে ফালতা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর খান বলেন, ফলতা বিধানসভা নদী তীরবর্তী এলাকায় বিগত কয়েক বছর ধরে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা ইতিমধ্যেই লিখিতভাবে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কে জানানো হয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেচ দপ্তর কে বাঁধ মেরামতের জন্য আবেদন করেন। ইতিমধ্যেই বাদ মেরামতের টেন্ডার হয়ে গেছে বলেও জানানো হয়। আর্থিক অনুদান এলেই বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করা হবে। তবে গ্রামবাসীদের প্রশ্ন কবে হবে বাঁধ মেরামতের কাজ? সে প্রশ্ন কারো জানা নেই তাই আতঙ্কে প্রহর গুনছেন তারাগঞ্জ এলাকার বাসিন্দারা।
{ads}