header banner

শুন্য মিলনস্থল

article banner

সব তীর্থ বারবার গঙ্গাসাগর একবার… এগোচ্ছে দেশ, এগোচ্ছে সভ্যতা, উন্নত হচ্ছে পরিষেবার মান। একসময় ভয়ঙ্কর কঠিন ও কঠোর পথ অতিক্রম করে পৌছতে হত গঙ্গাসাগরে। কখনও হেঁটে কখনও নৌকায় পাড়ি দিয়ে পৌঁছানো যেত গঙ্গা আর আর সাগরের মিলনস্থলে কপিল মুনির আশ্রমে। আজ সে সব ইতিহাস। তৎকালীন সময়ে গঙ্গাসাগরে যাওয়া পূর্নার্থীর ফেরার পথ চেয়ে বসে থাকতেন পরিবারের মানুষজন, কারণ পথ যেমন ছিল দুর্গম আবার বিপদ সংকুলও। যে কারনে পৌষ সঙ্ক্রান্তির পূন্য তিথির পূন্য লগ্নে যারা রক্তিম সূর্যকে সাক্ষী রেখে অবগাহন স্নান করতে গঙ্গাসাগরে পুন্য লাভের উদ্দেশ্যে যেতেন, তাদের অনেকেরই বাড়ি ফেরার সম্ভাবনা থাকত ক্ষীন। যে কারনে বলা হত সব তীর্থ বারবার গঙ্গাসাগর একবার।  


গঙ্গাসাগর মেলার কথা মাথায় এলেই যে চিত্র প্রথমেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে তা হল গঙ্গার তীরে বিপুল পরিমান ভক্তের জনসমাগমের চিত্র। কিন্তু করোনার দাপটে এই বছরের গঙ্গাসাগর মেলার কার্যত চোখে পড়ছে এক অন্য চিত্র। ১০ই জানুয়ারি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়েছে এই বছরের গঙ্গাসাগর মেলার। কিন্তু আজকের মেলায় যাত্রীদের সংখ্যা নিতান্তই নগন্য। ১০ই জানুয়ারি মেলার উদ্বোধন করেছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা শাসক পি উল্গানাথন, সঙ্গে ছিলেন গঙ্গাসাগর বকখালি উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান বঙ্কিম চন্দ্র হাজরা ,পুলিশ সুপার বৈভব তিয়ারি। তারপর দুদিন কেটে গেলেও আজ পর্যন্ত সেরকম লোক নেই বলেলেই চলে গঙ্গাসাগর মেলায়। কার্যত যে গঙ্গার ঘাটে এই সময়ে পা ফেলার যায়গা থাকে না, এবারে সেই গঙ্গার ঘাটে মানুষের উপস্থিতি নিতান্তই নগন্য। 


প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি কিন্তু নেওয়া হয়েছিল জোরকদমে। করা হয়েছে প্রচুর পরিমাণে গাড়ি ও লঞ্চের ব্যাবস্থা। দফায় দফায় গাড়ি ও লঞ্চ ভেসেল স্যানিটাইজিং করা হচ্ছে। বঙ্কিমবাবু জানান, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে মেলা প্রাঙ্গণে অনেক সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গঙ্গাসাগর মেলার জন্য বাড়তি ভেসেল, বাস চলাচল শুরু হয়েছে। মেলা চত্বরে লাগানো হয়েছে বাড়তি আলো ও বাড়ানো হয়েছে শৌচালয়ের সংখ্যা। বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তির যুগে গঙ্গাসগর এখন পর্যটকদের কাছে প্রতিদিনের তীর্থস্থান। কিন্তু যাদের জন্য এতো ব্যাবস্থা সেই পূর্নার্থীর দেখা প্রায় নেই বললেই চলে। পূর্বেই আশঙ্কা করা হয়েছিল, করোনার প্রভাবে এবার কমতে পারে পূর্নার্থীর সংখ্যা। কিন্তু চিত্রটা যে এইরকম হয়ে দাঁড়াবে তা হয়ত কেউই ভাবেননি।  


পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই এবছরের মেলার বিশেষ উদ্যোগ ‘দর্শন ই সহান’- এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাড়ি তে বসে অনলাইনে অর্ডার করলে তিন দিনের মধ্যে মেলার সামগ্রী পৌঁছে যাবে ঘরের দোরগোড়ায়। যার ফলে বর্তমানের গঙ্গাসাগর মেলার এই চিত্র বাস্তবিকভাবেই বিপুলভাবে অবাক করে তুলেছে সাধারন মানুষকে। 

{ads}

Gangasagar Mela 2021 Culture Covid 19 Corona Restriction Tradition River Ganga West Bengal India

Last Updated :