শেফিল্ড টাইম্স ডিজিটাল ডেস্ক : বাঙালির 'বারো মাসে তেরো পার্বন'এর মধ্যে বিভিন্ন 'মেলা' অন্যতম উৎসব। আর এই মেলার বৈচিত্র অসাধারণ। যেমন প্রত্যেক বছর ১ বৈশাখ গোবরডাঙ্গার প্রাচীন এই মশলা মেলা। প্রায় ২০৩ বছরের বেশি এই মেলার ইতিহাস। ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৮২৩ সালে গোবরডাঙ্গার (Gobardanga) জমিদার খেলারাম মুখোপাধ্যায়ের পুত্র কালীপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়, যমুনা নদীর ধারে জমিদার বাড়ি লাগোয়া মাঠে শুরু করেছিলেন মশলা মেলার।
{link}
উদ্দেশ্য ছিল কৃষকরা বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে তাদের জমির উৎপাদিত ফসল বিক্রি করবেন এবং ফসল বিক্রি করে জমিদারের খাজনা মিটিয়ে যাবেন। সেই উদ্দেশ্য নিয়েই সূচনা হয়েছিল এই মেলার। নাম দেওয়া হয়েছিল গোষ্ঠ বিহার মশলা মেলা। আজ অবশ্য জমিদারি প্রথার অবলুপ্তি ঘটেছে। নেই কৃষকদের খাজনা দেওয়ার নিয়মও। তবুও ঐতিহ্য মেনে মেলা চলে আসছে পরবর্তী বহু বছর ধরে। প্রতি বছরের মতো এ বছরও সূর্যোদয়ের আগেই শুরু হয়ে গিয়েছিল এই মেলা। এখনও বহুদূর থেকে কৃষকরা তাদের জমির উৎপাদিত ফসল নিয়ে আসেন বিক্রি করার জন্য। আবার রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু ক্রেতারা আসেন কৃষকদের কাছ থেকে মশলা কিনতে। বছরের প্রথম দিন পাইকারি বেচাকেনা হলেও পরবর্তীতে আরও ১০ দিন ধরে চলে খুচরো মশলার হাট।
{link}
মেলাকে কেন্দ্র করে স্বাভাবিক ভাবেই জমজমাট থাকে যমুনা নদীর ধারে এই ময়দান। সমস্ত রকম বিনোদনের ব্যবস্থাও রয়েছে এখানে। যমুনা নদী দিয়ে একসময় নৌকায় করে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পসরা নিয়ে আসা হত। মজেছে নদী, তাই কালের নিয়মে এখন যানবাহনের পরিবর্তন ঘটেছে। জমিদার বাড়ির পাশেই রয়েছে প্রসন্নময়ী কালী মন্দির। বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে মেলার পাশাপাশি মাকে দর্শনের জন্য দূর-দূরান্ত থেকে আসা ভক্তদের ভিড়ও দেখা যায়। মশলা মেলায় কৃষকরা যেমন পাইকারি মশলা বিক্রি করতে পারেন, তেমনই আবার ব্যবসাদারদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও সারা বছরের প্রয়োজনীয় মশলা বাড়ির জন্য কিনে নিয়ে যান।
{ads}