নিজস্ব সংবাদদাতা, উত্তরবঙ্গ: নদীতে চলছিল প্রতিমা বিসর্জন। সেই সময়ে ধেয়ে আসে ভয়াবহ বিপদ। মাল নদীতে হড়পা বানের দাপটে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় পরিবেশ। জলে তলিয়ে যান প্রতিমা নিরঞ্জন করতে আসা একাধিক মানুষজন। বুধবার রাত তখন সাড়ে ৮টা। মালবাজার এলাকায় মাল নদীতে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের জন্য নদীর ধারে উপস্থিত হয়েছিলেন বহু মানুষ। বিসর্জনের জন্য প্রতিমা নিয়ে আসা হয়েছিল ট্রাকে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ১০টিরও বেশি ট্রাকে চড়ে মানুষ এসেছিলেন বিভিন্ন প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রায়। প্রতিমা নিরঞ্জন যখন পুরোদমে চলছে তখন আচমকা ধেয়ে আসে হড়পা বান। সে দিকে খেয়াল ছিল না কারও। তার জেরে নদীতে যাঁরা নেমেছিলেন তাঁদের অনেকেই স্রোতের টানে ভেসে যান। ট্রাকও স্রোতের টানে ভেসে যায়। মাল নদীর মাঝে একটি চর রয়েছে। সেই চরে উঠে প্রাণ বাঁচান অনেকে। এখনও পর্যন্ত অনেকে নিখোঁজ বলেও দাবি করেছেন নদীর আশপাশে থাকা স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন প্রশাসনিক কর্তারা। পৌঁছেছে দমকল এবং পুলিশ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান রাজ্যের মন্ত্রী বুলু চিকবড়াইকও। পাশাপাশি, নামানো হয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও। যাঁরা নদীর মাঝে চরে আটকে ছিলেন তাঁদের কিছু ক্ষণের মধ্যে উদ্ধার করা হয়।
{link}
এখনও পর্যন্ত আট জনের দেহ পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছেন জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু। তাঁদের দেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছে স্থানীয় হাসপাতালে। ওই দেহগুলি ময়নাতদন্ত করা হবে। তবে কত জন ভেসে গিয়েছে তা এখনই বলা সম্ভব নয় বলেও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তার কারণ, স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ওই সময় নদীতে অনেকে নেমেছিলেন। ইতিমধ্যেই ১১ জনকে উদ্ধার করে মালবাজার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। জেলাশাসক আরও জানিয়েছেন, নদীর চরে আটকে রয়েছেন ২০ জন। রাতে উদ্ধারকাজ চালানো হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। মাল নদীর যেখানে প্রতিমা বিসর্জন হচ্ছিল সেখানে যথেষ্ট আলো রয়েছে। কিন্তু নদীর অন্যত্র উদ্ধারকাজ চালানো হলে রাতে ব্যবস্থা করতে হতে পারে। সেই দিকগুলিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে প্রশাসনের তরফে।
{link}
মালবাজারের মাল নদীতে হড়পা বানে মৃত্যুমিছিল। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব শেষে এহেন মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় শোকের আবহ রাজ্যজুড়ে। শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিহত এবং আহতদের পরিবারের পাশে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার। নিহতদের পরিবারপিছু ২ লক্ষ টাকা এবং জখমদের চিকিৎসায় ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সাহায্য ঘোষণা। বৃহস্পতিবার সকালে টুইটে আর্থিক সাহায্যের কথা জানানো হয়েছে।