শেফিল্ড টাইমস ডিজিটল ডেস্ক: আজ পবিত্র শুক্ল চতুর্দশী তিথি — এই দিনটিকেই মা তারার আবির্ভাব তিথি হিসেবে শ্রদ্ধা ও ভক্তির সঙ্গে পালন করা হয় তারাপীঠে। ভোর চারটের সময় থেকেই শুরু হয় আজকের বিশেষ আচার-অনুষ্ঠান। মা তারাকে স্নান করিয়ে সম্পন্ন হয় মঙ্গলারতি, তারপর তাঁকে মূল গর্ভগৃহ থেকে বের করে নিয়ে আসা হয় বিশ্রামাগার বা বিরাম মঞ্চে। পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী, আজকের এই বিশেষ দিনে মা তারা পশ্চিম দিকে মুখ করে বসেন, কারণ কথিত আছে — মায়ের পশ্চিম দিকে অবস্থান করছেন তাঁর বোন মা মৌলাক্ষী। তাই আজকের দিনে মা তারা তাঁর বোনের দর্শনের জন্য পশ্চিমমুখী হয়ে বসেন।
তারাপীঠ মন্দিরের দীর্ঘ ঐতিহ্য অনুযায়ী, বছরে মাত্র দুটি বিশেষ দিনে — রথযাত্রা ও এই শুক্ল চতুর্দশী তিথিতে — মা তারাকে গর্ভগৃহ থেকে বাইরে আনা হয়। ভোরবেলা বিশ্রামাগারে আগমন করার পর সারাদিন ধরে চলে মা তারার পূজার্চনা, হোম-যজ্ঞ, ও ভক্তদের নিরন্তর ভিড়। বিশ্রামাগারটি অত্যন্ত বিশেষভাবে নির্মিত, এখানে রয়েছে আটটি দরজা, যার প্রতিটি দরজা দিয়েই মা তারা আজ ভক্তদের দর্শন দেন। সকাল থেকে তারাপীঠ মন্দিরে অগণিত ভক্তের সমাগম দেখা যায়। মা তারার দর্শন ও পূজার জন্য ভক্তরা ভোর থেকেই সার বেঁধে অপেক্ষা করছেন। আজকের দিনে একটি বিশেষ ধর্মীয় নিয়ম মানা হয় — আজ মা তারাকে কোনো অন্নভোগ নিবেদন করা হয় না। শুধুমাত্র ফল, মিষ্টি ও বিভিন্ন উপকরণে মায়ের পূজা হয়। এমনকি তারাপীঠবাসীরাও আজ অন্নগ্রহণ থেকে বিরত থাকেন, কারণ বিশ্বাস করা হয় আজকের দিনে মা তারাও অন্নভোগ গ্রহণ করেন না।
{link}
দিনভর চলে পূজা, যজ্ঞ, ও আরাধনা। সন্ধ্যা নামতেই মা তারাকে পুনরায় তাঁর গর্ভগৃহে ফিরিয়ে আনা হবে, এরপর সম্পন্ন হবে সন্ধ্যা আরতি ও শীতল ভোগ নিবেদন। এইভাবে শেষ হবে মা তারার আবির্ভাব তিথির এই বিশেষ পূজা পর্ব। এদিন তারাপীঠ মন্দির ও আশেপাশের এলাকায় দেখা গেছে অগণিত ভক্তের ঢল। যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেই জন্য প্রশাসন ও মন্দির কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী, এছাড়াও ভক্তদের সুবিধার্থে অ্যাম্বুলেন্স ও প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আজ তারাপীঠে চলবে অবিরাম আরাধনা, ভক্তি আর উৎসর্গের মহোৎসব। মা তারা, তারাপীঠ এবং বিশ্বাস এই তিনের মিলনেই আজ উৎসবের আবহে মুখরিত সমগ্র এলাকা।
{ads}