header banner

দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঢোলাহাটে সুপারি কিলারকে স্ত্রীর প্রেমিক সাজিয়ে স্ত্রীকে খুন

article banner

সুদেষ্ণা মন্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: এ যেন কোন হিন্দি থ্রিলার ছবি। সুপারি কিলার দিয়ে নিজের স্ত্রীকে খুন করানোর অভিযোগ। পরিকল্পনা মতো গোড়ায় প্রথমে স্ত্রীর সঙ্গে সুপারি কিলার প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে। খুন করার জন্য পেয়েছিল ৫০ হাজার টাকা। প্রথম স্ত্রীকে খুনের পর দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে নির্বিঘ্নে সংসার করতে চেয়েছিলেন নাসিরউদ্দিন শাহ। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। অবশেষে শুক্রবার গভীর রাতে বেঙ্গালুরুর একটি হোটেল থেকে নাসিরউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে ঢোলাহাট থানার পুলিশ। ট্রানজিট রিমান্ডে ধৃতকে শনিবার রাতে ঢোলাহাটে নিয়ে আসা হয়। ধৃতকে সোমবার কাকদ্বীপ মহকুমা আদালতে তোলা হলে পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। এর আগে ঢোলাহাটের লক্ষ্মীনারায়ণপুর থেকে সুপারি কিলার আতিয়ার শেখকে ধরেছিল পুলিশ। আতিয়ারকে জেরা করেই উঠে আসে নাসিরউদ্দিনের নাম।
{link}
১০ বছর আগে সাগরের খানসামাবাদের বাসিন্দা সাহেবা বিবির সঙ্গে নামখানা ব্লকের বালিয়াড়া গ্রামের নাসিরউদ্দিন শাহের বিয়ে হয়। পরে তারা নামখানার পাতিবুনিয়াতে থাকতে শুরু করে। দম্পতির এক মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। নাসিরউদ্দিন কর্মসূত্রে ভিন রাজ্যে চলে যায়। পরে দ্বিতীয় বিয়ে করে নাসিরউদ্দিন। এরপর থেকেই প্রথম স্ত্রীয়ের সঙ্গে বিবাদের সূত্রপাত। ঢোলাহাট থানার পুলিশ তদন্তে  জানতে পারে যে সাহেবাকে মেরে ফেলার ছক কষতে শুরু করে নাসিরউদ্দিন। যোগাযোগ করে নিকট আত্মীয় আতিয়ার শেখের সঙ্গে। আতিয়ারকে প্রথম স্ত্রীয়ের খুনের বরাত দেয় নাসিরুদ্দিন। টাকার লোভে রাজি হয়ে যান আতিয়ারও। এরপর নাসিরউদ্দিনের পরিকল্পনা মতো আতিয়ার ধীরে ধীরে সাহেবা বিবির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করেন। তারপর প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকবার সাহেবাকে নিয়ে হোটেলেও গিয়েছিল আতিয়ার। 
ও দিকে ফেব্রুয়ারি থেকে স্ত্রীকে খুনের জন্য ভিন্ রাজ্য থেকে দফায় দফায় আতিয়ারকে ৫০ হাজার টাকা পাঠায় নাসিরউদ্দিন। কিন্তু আতিয়ার খুন করছিলনা। তা নিয়ে অধৈর্য হয়ে ওঠে নাসিরউদ্দিন। টাকা নিয়েও কাজ না করায় আতিয়ারকে চাপ দিতে থাকে। অবশেষ ১১ এপ্রিল সাহেবাকে খুন করে আতিয়ার। খুনের দিন সকালে পাতিবুনিয়ার বাড়ি থেকে পাঁচ বছরের ছেলে সেলিমকে নিয়ে বেরিয়ে ছিল সাহেবা। সাগরে বাপের বাড়ি ঘুরে ছেলেকে নিয়ে বিকেলে চলে আসে মন্দিরবাজারের লক্ষ্মীকান্তপুরে। সেখানে প্রেমিক আতিয়ারের সঙ্গে দেখা করে। তারা একটি স্থানীয় হোটেলে খাওয়া দাওয়াও করে। ওইদিন রাতে লক্ষ্মীকান্তপুর থেকে বাস ধরে ঢোলাহাটের শিমুলবেড়িয়ায় আসে তিন জন। অভিযোগ, সেখানে পাওয়ার হাউসের পিছনের দিকে খালের কাছে সাহেবাকে টেনে নিয়ে যায় আতিয়ার। তারপর গলায় কাপড়ের ফাঁস দিয়ে খালের জলকাদায় মুখ চেপে ধরে আতিয়ার। অল্পক্ষণের মধ্যে শ্বাস রোধ হয়ে মৃত্যু হয় সাহেবার। ঘটনাস্থলে ছোটো ছেলে এই ঘটনা দেখে ফেলে। মাকে মেরে ফেলছে দেখে সাহেবার ছোট্ট ছেলেটি পালিয়ে যায়। স্থানীয় কয়েকজন যুবক শিমুলবেড়িয়া পাওয়ার হাউসের কাছে রাস্তার ধারে একটি বাচ্ছাকে কাঁদতে দেখে পুলিশে খবর দেন। পরে ঢোলাহাট থানার পুলিশ এসে বাচ্ছাটিকে নিয়ে যায়। সাহেবার বাচ্ছার থেকেই খুনের কথা জানতে পারে পুলিশ। 
{link}
রাতেই খাল থেকে সাহেবার দেহ উদ্ধার হয়। আতিয়ারের নাম বাচ্ছাটির থেকে জানতে পারে পুলিশ। এই ঘটনার পর ঢোলাহাট থানার অভিজ্ঞ পাঁচ অফিসারকে নিয়ে এক সিট গঠন করা হয়। এই খুনের ঘটনায় প্রথমেই আতিয়ার শেখকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে ধৃতকে জেরা করে পুলিশ জানতে পরে সাহেবার স্বামী নাসিরউদ্দিনের নাম। এ দিন মন্দিরবাজারের ডিএসপি বিশ্বজিৎ নস্কর বলেন, “একজনকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। সে ছিল সুপারি কিলার। খুনের বরাত দিয়েছিল নিহতের স্বামী। তাকেও বেঙ্গালুরুর একটি হোটেল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দু'জনকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে এ বার মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।“
{ads}

south 24 parganas dholahat west bengal news murder সংবাদ

Last Updated :

Related Article

Care and Cure 1
Care and Cure 1

Latest Article