header banner

গঙ্গাসাগরে পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে কড়া নিরাপত্তার বেষ্টনী মেলা চত্বর জুড়ে

article banner

সুদেষ্ণা মন্ডল, গঙ্গাসাগর: অপেক্ষা আর মাত্র কয়েক সপ্তাহ। জানুয়ারি মাসের ৮ তারিখ থেকে শুরু হতে চলেছে গঙ্গাসাগর মেলা। মেলার আগে বহু পুণ্যার্থীরা ভিড় জমিয়েছে গঙ্গাসাগরের কপিলমুনি মন্দির চত্বরে।এই বছর রেকর্ড সংখ্যক পুণ্যার্থীদের  সমাগম হতে পারে সাগর সঙ্গমে। রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে গঙ্গাসাগর মেলাকে কেন্দ্র করে পড়া নিরাপত্তা চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে।গঙ্গাসাগর মেলায় পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তায় কোনও খামতি রাখতে চাইছে না রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যে মেলার দিনগুলির জন্য সুন্দরবন পুলিশ জেলার পক্ষ থেকে প্রায় ১৩ হাজার অস্থায়ী হোমগার্ড নিয়োগ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। ৩০ জন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার অফিসার সর্বক্ষণ নজরদারি চালাবেন।
মেলার জন্য পুলিশের ১২টি সেক্টর- সহ সাব সেক্টর ঢেলে সাজানো হয়েছে। ভিড় সমাল দিতে ট্র্যাফিক ব্যবস্থা দুটো সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। মুড়িগঙ্গা নদী পেরোনোর আগে মূল ভূখণ্ড ট্র্যাফিক পূর্ণার্থীদের ভিড় সামাল দেবে। আর সাগরদ্বীপের জন্য আইল্যান্ড ট্র্যাফিক ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যাত্রী পারাপারের জন্য পরিবহণ দপ্তরের পক্ষ থেকে ৬টি বার্জ, ৪৫টি ভেসেল ও ৮টি লঞ্চের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। মহিলা পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তার জন্য মহিলা পুলিশের ৩০টি উইনার্স টিম নজরদারি চালাবে মেলা প্রাঙ্গণ ও আশেপাশের এলাকায়। এই টিমের সদস্যরা দিনে রাতে মোটরবাইকে করে নজরদারি চালাবে। কলকাতা ও ডায়মন্ড হারবার পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় রাখার জন্য সুন্দরবন পুলিশের দু'টি দল বাবুঘাট ও পৈলানে মোতায়েন থাকবে। পূর্ণার্থীদের সুবিধার্থে এ বারও সুন্দরবন পুলিশ জেলার পক্ষ থেকে গঙ্গাসাগর সহায়তা অ্যাপ চালু রাখা হবে।

{link}
গঙ্গাসাগরের সমুদ্রতটে ও সমুদ্রস্নানের উপর নজরদারি চালানোর জন্য পুলিশের প্যাট্রোলিং টিম রাখা হবে।আগে অস্থায়ী টাওয়ারের মাধ্যমে রেডিয়ো টেলিফোনি (আরটি) কমিউনিকেশনের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে হতো। রাজ্য সরকার এ বছর লট নম্বর আট, কচুবেড়িয়া থেকে গঙ্গাসাগর পর্যন্ত স্থায়ী টাওয়ার বসিয়েছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে এই কমিউনিকেশন সিস্টেম আরও উন্নত করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে ৭টি কন্ট্রোল রুম ও ১৪টি সাব কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে। আগামী ১০ থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত এই কন্ট্রোল রুম থেকে ২৪ ঘন্টা নজরদারি চালানোর পাশাপাশি প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হবে। এ ছাড়া পুলিশের পক্ষ থেকে ৯১টি মোটরবাইক প্যাট্রোলিং টিম রাখা হবে। এর মধ্যে কলকাতা পুলিশের ২০টি মোটরবাইক প্যাট্রোলিং টিম থাকবে। জলপথে নজরদারি চালানোর জন্য ১৯টি লঞ্চ ও ৬টি স্পিডবোট দিয়ে প্যাট্রোলিং চালানো হবে। 

এ বারের মেলাতে অ্যান্টি ক্রাইম প্যাট্রলিং টিমের উপর সবচেয়ে বেশি জোরদেওয়া হয়েছে। মেলায় ২৩টি অ্যান্টি ক্রাইম প্যাট্রোলিং টিম সাদা পোশাকে নজরদারি চালাবে। মেলা প্রাঙ্গণের পাশাপাশি সমুদ্রতট ও কচুবেড়িয়া পয়েন্টে সবচেয়ে বেশি নজরদারি চালানো হবে। মেলায় আসা যাওয়ার পথে পুণ্যার্থীদের ভিড় সামাল দেওয়া বা ক্রাউড কন্ট্রোলের জন্য বাফার জোনের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। জেটিঘাটগুলোতে ভিড় জমলেই বাফার জোনে আটকে দেওয়া হবে পুণ্যার্থীদের বাস-সহ বিভিন্ন গাড়ি। পরে ধীরে ধীরে পুণ্যার্থীদের পাস করানো হবে।নাশকতা দমনের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে ৬টি অ্যান্টি সাবোটেজ টিম রাখা হবে। ২টি বোমা ডিসপোজাল টিম রাখা হচ্ছে। নজরদারির জন্য স্নিফার ডগ রাখা হবে। এ ছাড়া পুলিশের পক্ষ থেকে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট, এনডিআরএফ কোস্টগার্ড-সহ অন্যান্যদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কড়া নজরদারি চালানো হবে। পুলিশের তরফে ৪১৫টি সিসি ক্যামেরায় নজরদারি চালানো হবে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২ হাজারের বেশি সিসি ক্যামেরায় নজরদারি চালানো হবে। এই সমস্ত সিসি ক্যামেরাগুলো সরাসরি পুলিশ ও প্রশাসনের কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। যদি সিসি ক্যামেরার আওতাধীন এলাকায় কোনও গোলমাল বা সমস্যা তৈরি হয়, তা হলে তড়িঘড়ি কন্ট্রোল রুম থেকে পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হবে। সিসি ক্যামেরা ছাড়াও ১১ টি ড্রোনের মাধ্যেমে পুলিশের পক্ষ থেকে নজরদারি চালানো হবে।
{ads}

news Gangasagar security Gangasagar Mela West Bengal সংবাদ

Last Updated :