নিজস্ব সংবাদদাতা, হাওড়া: বিধায়কের অফিসে ব্যবসায়ীকে ডেকে নাকি হুমকি দিয়েছিলেন তাঁর ঘনিষ্ঠরা ? এমনকি পুলিশের উপস্থিতিতে নাকি হুমকি দেওয়া হয়েছিল ? এই অভিযোগ তুলে কয়েকটি মিডিয়ায় নাকি খবর প্রচার করা হয়। হাওড়ার শিবপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ওই ঘটনা নিয়ে এবার সরব হলেন বিধায়ক তথা রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মনোজ তিওয়ারি। তাঁর সাফ জবাব অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। মনোজের দাবি, তাঁকেই শুধু নয়, তাঁর বিধায়ক অফিসের কর্মীদের নাম জড়িয়ে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা হয়েছে এই ঘটনায়। রাজ্যের সমবায় অরূপ রায় বিষয়টি ব্যক্তিগতভাবে তাঁর কাছে না জেনে যেভাবে বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলেছেন এদিন তারও সমালোচনা করেন মনোজ। মনোজ বলেন, আমার এলাকায় কেউ যেন নাক না গলায়। কোনও বিষয় না জেনে কেউ যেন কোনও মন্তব্য না করে। সে অরূপ রায় হোক বা এক্স ওয়াই জেড হাওড়ার কেউ হোক। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে মনোজ তিওয়ারি বলেন, বুধবার বিধায়ক এবং বিধায়কের অফিসের কর্মীদের নামে কালিমালিপ্ত করা হয়েছে। প্রায় ২ বছর আমি ভালভাবে কাজ করতে পেরেছি। নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারছি। সততার সঙ্গে কাজ করতে চাইছি। কিন্তু কিছু মানুষের তা পছন্দ হছে না। সেই জন্য আমার পিছনে এবং বিধায়ক অফিসে যারা কাজ করে তাঁদেরকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
{link}
এর আগে এই প্রপার্টি ম্যাটারের ৩ দিন আগে সাঁতরাগাছি এলাকায় জল খাওয়া নিয়ে একটা ঘটনা ঘটেছিল। যেখানে বিধায়ক, বিধায়ক অফিসের কর্মীদের নামে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা হয়েছিল।কিন্তু আমরা সেই ঘটনাতেও যুক্ত ছিলাম না। সেখানে জলের সমস্যা ছিল সেখানে আমরা কেএমডিএ'কে দিয়ে জলের সমস্যা দূর করার চেষ্টা করেছিলাম। পরে জানতে পারলাম স্থানীয় লোকেদের অভিযোগ টাকা চাওয়া হচ্ছিল। কিন্তু মিডিয়া আমাদের কথা না শুনে অন্যভাবে কভার করছে এটা দুঃখজনক। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারা যায় কেএমডিএর এক কর্মী নতুন পাইপ লাইন করার জন্য বাড়িতে টাকা চেয়েছিল। ৩-৪ দিনের মধ্যে এমন ঘটনা প্রায় ২টো হয়ে গিয়েছে। প্রায় ৬-৭ মাস আগে চক্রান্ত করা হয়েছিল। কিছু মিডিয়া মানুষের কাছে ভুল বার্তা দিয়ে আমার নামে বদনাম করার চেষ্টা করছে। খেলার মাঠ থেকে যা সন্মান পেয়েছি সেই সন্মানকে নষ্ট করার চক্রান্ত করা হচ্ছে। হাওড়ার মন্ত্রী অরূপ রায় মুখ খুলে বলেছেন, দল এইসমস্ত জিনিস বরদাস্ত করবে না। কি জিনিস তা উনি বলেননি। এটা আমার এলাকার ঘটনা। উনি যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করতেন তাহলে আমার ভাল হত। আমাদের দল অনেক ভাল দল। ঘরের ভেতর বিভীষণ আছে। তা খোঁজ করার জন্য দল দেখবে। দলের কাছে সব খবর যায়। এই ব্যাপারে দল চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয় তাহলে আমার মনে হয় ভাল হবে। ২ বছর হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে আমি ছোট থেকে বড় সব বিষয়ই উচ্চ নেতৃত্বকে জানাই। আমি কারও এলাকায় গিয়ে নাক গলাচ্ছি না। সেই কারণে আমার এলাকায় কেউ যাতে নাক না গলায় সেটাই আমার অনুরোধ। কেউ যদি পুরো বিষয় না জেনে যেন মন্তব্য না করে। সে অরূপ রায় হোক বা অন্য কেউ হোক। হাওড়ার সভাপতি ডোমজুড়ে থাকেন। আমার এলাকায় কি হচ্ছে তা আগে আমি জানব নাকি উনি জানবেন। যদি কিছু জিজ্ঞাসা করতে হয় কোন ব্যাপারে আমাকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন। সকলকে একটা প্রসেসের মধ্য দিয়ে, নিয়মের মধ্যে দিয়ে চলতে হয়।
{link}
অন্যদিকে, এদিন রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায় সাংবাদিকদের বলেন, এই ধরনের কার্যকলাপ দল কখনও অনুমোদন দেয় না এবং দল কখনও বরদাস্ত করবে না। এবং দলকে জানালে দল নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেবে।এদিকে, রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায় আরও বলেন, অপরাধমূলক কাজ যারা করেন পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। রাজ্য সরকার, মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্য সচিবকে যখন জানিয়েছে তখন কিছু হবে। কেউ সম্পত্তি জোর করে কেড়ে নিতে পারবে না। এদের পাশে আমরা আছি। আমার কাছে কেউ যদি অভিযোগ করে তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে। পুলিশ গিয়ে তাঁদের আশ্বাস দিয়েছে। মানুষের উপর অত্যাচার তৃণমূল কংগ্রেস করে না। দল এসব বরদাস্ত করবে না কখনও। ওরা মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, জেলা প্রেসিডেন্টকে কি জানিয়েছেন ? আমাকে জানিয়েছেন ? কে কি অপরাধ করল তার জন্য দলের ভাবমুর্তি নষ্ট হবে না। দলের ভাবমুর্তি এত ঠুনকো নয়। মুখ্যমন্ত্রীকে জানানোর পরে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। দল এটাকে মান্যতা দেয় না। স্বীকৃতি দেয় না। দল যে কোনও অপরাধের বিরুদ্ধে। অত্যাচারিতদের পাশে দল আছে।