header banner

অভাবকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে দেশের হয়ে সোনা জেতার স্বপ্ন অপর্নার

article banner

সুদেষ্ণা মন্ডল, ডায়মন্ড হারবার: চোখে তার অনেক স্বপ্ন, দেশের হয়ে সোনা জিতে আনবে সে। কিন্তু অভাবের সংসারে যেখানে দুবেলা ভালো করে খাবারই জোগাড় হয় না, সেখানে সমস্ত অভাবকে উপেক্ষা করেই সোনা জেতার স্বপ্ন দেখছে অপর্ণা বৈদ্য। অপর্ণা ডায়মন্ডহারবার ১ নম্বর ব্লকের নারায়নপুর এলাকার বাসিন্দা। রাস্তার পাশেই এক চিলতে ভাঙাচোরা ঘরে এখন আসার আলো যোগাচ্ছে অপর্ণা। অভাবের প্রতিবন্ধকতাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে খেলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে সে। 

{link}

অপর্ণার বাবা জয়দেব বৈদ্য লোকের দোকানে কর্মচারীর কাজ করেন।তার মা কালী বৈদ্য সকাল থেকেই সংসার সামলাতে চলে যান লোকের বাড়িতে পরিচালিকার কাজ করতে। তিন সন্তানকে নিয়ে অভাবের সংসার জয়দেব বাবুর। কিন্তু শত অভাবের মাঝেও মেয়ে অপর্ণাকে নিয়েই স্বপ্ন দেখছে বাবা-মা পরিবারের লোকজন। কলকাতা সল্টলেকে স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত অল বেঙ্গল অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতায় ১০০ মিটার ও ৩০০ মিটার দৌড়ে সারা বাংলার হয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছে অপর্না। মিলেছে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার ছাড়পত্র। আর তাতেই এখন আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অপর্ণাকে খেলানোর স্বপ্ন দেখছেন অপর্ণার কোচ থেকে শুরু করে পরিবারের লোকজন। শত শত প্রতিযোগিদের মাঝেও গোটা বাংলা তথা ডায়মন্ড হারবার -এর মুখ উজ্জ্বল করেছে অপর্ণা। আগামী দিনে তার স্বপ্ন রয়েছে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে গোটা দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে সে। কিন্তু যে পরিবারে নুন আনতে পান্তা ফুরোয় সেখানে আন্তর্জাতিক জয়ের স্বপ্ন কিভাবে সম্ভব? স্কুলে পড়ার সময় স্কুলের এক শিক্ষক তার এই প্রতিভা দেখে তাকে ভর্তি করে দিয়েছিল অ্যাথলেটিক্সে। এরপর থেকেই তার সেই অদম্য ইচ্ছা হার মানিয়েছে অভাবের প্রতিবন্ধকতাকে। প্রতিদিন সকাল ছটার সময় উঠে মাঠে প্রাকটিসে যায় অপর্না।এরপর প্র্যাকটিস সেরে বাড়িতে গিয়েই তাকে চলে যেতে হয় স্কুলে। পাশাপাশি অভাবের সংসারে তার মায়ের হাতে হাতে করতে হয় একাধিক কাজ। কোনোদিন হয়তো ঠিকঠাক করে খাওয়াটাও হয় না তার।আবার বিকেলে স্কুল থেকে ফিরে ফের প্র্যাকটিস। আর তার সেই অভ্যাসে প্রত্যেকটি সময় তার পাশে থাকে তার মা। অভাবের মধ্যেও মেয়েকে মানুষের মতোন মানুষ করতে শক্ত খুঁটি এখন অপর্ণার মা।  

{link}

একটা ভালো অ্যাথলেটিক্সের যে সমস্ত খেলার সরঞ্জাম থেকে শুরু করে খাদ্য দ্রব্য প্রয়োজন তার কোন কিছুই পায় না অপর্ণা। কিন্তু তারপরেও তার সেই অদম্য জেদের কাছে হার মেনেছে অভাব। ছোটবেলায় বাবা-মা ভালোবেসে নাম রেখেছিল অপর্না। যার মানে দেবী অথবা দুর্গা। আর সেই অপর্নাই এখন হয়ে উঠেছে এই অভাবী পরিবারের গর্ব। আগামী দিনে বাংলা জয়ের পাশাপাশি সারা দেশের হয়ে সে সোনা জিতে এনে উজ্জ্বল করতে চায় ডায়মন্ডহারবার তথা গোটা দেশের নাম। শুধু চায় একটু সরকারি সাহায্য। যদি সরকার পাশে এসে দাঁড়ায় তাহলে হয়তো অভাবী পরিবারের অপর্নার  দেখা সেই স্বপ্ন একদিন পূরণ হবে।
{ads}

News Athletics Diamond Harbour West Bengal India ডায়মন্ড হারবার সংবাদ

Last Updated :