header banner

বর্ধমানের সীতাভোগ মিহিদানার পর এবার শক্তিগড়ের ল্যাংচা পাড়ি দিলো বিদেশের মাটিতে

article banner

নিজস্ব সংবাদদাতা, বর্ধমানঃ বর্ধমান মানেই সীতাভোগ। আর সাথে মিহিদানার ও শক্তিগড়ের বিখ্যাত ল্যাংচা। প্রায় শতাধিক বৎসরের শক্তিগড়ের এই ল্যাংচা এবার পাড়ি দিলো বিদেশির মাটিতে। জিআই ট্যাগের জন্য উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। তাই শক্তিগড় ছাড়িয়ে এখন গোটা রাজ্যের পাশাপাশি বিদেশের মাটিতেও সমাদৃত হচ্ছে এই ল্যাংচা। 

{link}

আজ থেকে প্রায় শতাধিক বর্ষ পূর্বে এই ল্যাংচার আবিস্কার করেন হেমচন্দ্র ঘোষ। শক্তি গড়ের এই বিখ্যাত ল্যাংচা আবিস্কারের সঠিক সাল জানা না গেলেও কেউ কেউ বলেন ইংরাজীর ১৯২৮ সাল আবার কেউ কেউ বলেন বাংলার ১২৯৮ সালে শক্তিগড় ষ্টেশন সংলগ্ন এলাকার মিষ্টি ব্যবসায়ী হেমচন্দ্র ঘোষ প্রথম এই মিষ্টি ল্যাংচা তৈরী করেন। লোক মুখে প্রচারিত ইংরেজির ১৯২৮ সালের আগে বর্ধমানের রাজ পরিবারে সাথে বিয়ে হয়েছিল কৃষ্ণনগরের রাজকন্যার। রাজ পুত্রবধূ অন্তঃসত্ত্বা হলে তাঁর মুখের রুচি ফেরাতে হেমচন্দ্র ঘোষকে ভাজা মিষ্টি তৈরী করতে বলা হয়। তখন তিনি পান্তুয়ার মত বিশেষ আকৃতির এই ভাজা মিষ্টি তৈরী করেন। হেমচন্দ্র ঘোষের এই ঘিয়ে ভাজা মিষ্টি পছন্দ হয় রাজ পুত্রবধূর। পরবর্তীকালে এই বিশেষ আকৃতির মিষ্টিকে ল্যাংচা নামে অভিহিত করা হয়।জানা যায়, বর্ধমানের শক্তিগড় লাগোয়া আমড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন হেমচন্দ্র ঘোষ। হেমচন্দ্র বাবুর একটি পায়ে সমস্যা ছিলো। তিনি কিছুটা খুঁড়িয়ে হাটতেন বলেই নাকি তার বানানো মিষ্টির নাম রাখা হয়েছে ল্যাংচা।বর্ধমানের শক্তিগড় রেল ষ্টেশন থেকে বেড়িয়ে আসার মুখেই আজও জ্বলজ্বল করছে বিখ্যাত ল্যাংচা-র দোকানটি। এটিই ভূ ভারতে প্রথম ল্যাংচা আবিষ্কারক হেমচন্দ্র ঘোষের দোকান। যদিও বর্তমানে এই দোকান দুবার হাত বদল হয়েছে। আপাতত এই দোকানের অধিকর্তা স্বপন মালিক। স্বপনবাবু জানিয়েছেন, হেমচন্দ্র ঘোষের দুটি মেয়ে। দুটি মেয়ের বিয়ে দেবার পর ধীরে ধীরে তিনি দোকান সামলাতে অসমর্থ হলে বাঁকুড়ার বড়জোড়ার বাসিন্দা তাঁর শ্যালকের পরিবারের হাতে দোকানের ভার তুলে দেন। এরপর তাঁরাই হেমচন্দ্রবাবুর শেখানো পথেই ল্যাংচা তৈরী করতে থাকেন। কিন্তু কালক্রমে তাঁরাও আর দোকান চালাতে না পারায় বিক্রি করে দেবার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর স্বপন বাবুরা ১৯৮৮ সাল নাগাদ এই বিখ্যাত ল্যাংচা-র দোকানটি কিনে নেন। স্বপনবাবু জানিয়েছেন, এই দোকানেই এসেছিলেন মহানায়িকা সুচিত্রা সেন।

{link}

 এমনকি রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ও এই দোকানের মিষ্টি খেয়ে গেছেন। এছাড়াও অসংখ্য অভিনেতা-অভিনেত্রী এসেছেন। স্বপনবাবু জানিয়েছেন, শক্তিগড় বাজার এলাকায় রাস্তা সম্প্রসারণ করার জন্য পুরনো সেই ঐতিহাসিক দোকানটি ভাঙা পড়ে। নষ্ট হয়ে যায় বহু দুষ্প্রাপ্য ছবিও যা ইতিহাস সাক্ষী। তিনি জানিয়েছেন, হেমচন্দ্রবাব যে ল্যাংচা তৈরী করতেন তার উপাদান ছিলো ছানা, চিনি, গাওয়া ঘি, বড় এলাচ, খাবার সোডা, খোওয়া ক্ষীর, চাল গুড়ি এবং ময়দা। ল্যাংচার জন্য তিনি দুরকম রস ব্যবহার করতেন একটি পাতলা এবং অন্যটি মোটা। আজও সেভাবেই তাঁরা ল্যাংচা তৈরী করেন। যদিও তিনি জানিয়েছেন, বাজারের পরিস্থিতি অনুযায়ী এখন তাঁরা ৫ ও ১০ টাকার দুরকমের ল্যাংচাই তৈরী করেন। হেমচন্দ্রবাবু করতেন ৩ থেকে ৪ রকমের ল্যাংচা। স্বপনবাবুর দাবী, তাঁরা কষ্ট করেও হেমচন্দ্রবাবুর সেই ল্যাংচার গুণগত মানকে আজও বজায় রাখার চেষ্টা করে চলেছেন এবং ভবিষ্যৎ এও করবেন।

{ads} 
 

News Famous sweet Mihidana Sitabhog Langcha Shaktigarh GI tag Burdwan West Bengal India ল্যাংচা শক্তিগড় বর্ধমান সংবাদ

Last Updated :