নিজস্ব সংবাদদাতা, বীরভূম: সকালে ঘুম থেকে উঠেই ছুটতে হয় ধান রোয়ার কাজে। প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়েই তারা অটোয় করে যাতায়াত করেন। কিন্তু মঙ্গলবার কাজ থেকে ওই একই রাস্তা দিয়ে ফেরার সময় ঘটল বিপত্তি। দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার একটি বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় একটি অটোর। যার জেরে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় অটোর চালক সহ আট মহিলা যাত্রীর। মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে ১৪ নং জাতীয় সড়কে বীরভূমের মল্লারপুরের মেটেলডাঙা মোড়ে।
{link}
পুলিশ সূত্রের খবর, মৃতদের নাম, অটো চালক সীতারাম হেমব্রম(২৬), যশোমতী হেমব্রম(৫০), হপন কুরি বেসরা(৩০), হপন হেমব্রম(২৬), পাকর হেমব্রম(২০), সানোদি হেমব্রম(৪৫), সাকিলা হেম ব্রম(৫৪), বাসন্তী সরেন(৪০)। তবে মৃত এক মহিলার এখনও পর্যন্ত পরিচয় পাওয়া যায়নি। স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই আট যাত্রী রামপুরহাট থানার আদিবাসী অধ্যুষিত পারকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। রোজ সকালে তারা ওই অটোতে করেই মল্লারপুরের গৌড়বাজারে ধান রোয়ার কাজে যেতেন। মঙ্গলবার বিকেলে তারা কাজের শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জাতীয় সড়কের মাঝে একটি গর্ত থাকায় অটোটি ডানদিকে বেঁকে যায়। ঠিক সেই সময় উল্টো দিক থেকে একটি সরকারি সিউড়িগামী বাস দ্রুত গতিতে আসছিল। এরপর অটোটি বাঁদিকে ঘুরতে যাওয়ার চেষ্টা করলেই বাসের সাথে অটোর মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। স্থানীয়রা একটি বিকট আওয়াজ শুনে ঘটনাস্থলে এসে দেখেন অটোটি দুমড়ে মুচড়ে পড়ে আছে এবং অটো চালকসহ আটজন মহিলা যাত্রী রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন।
{link}
দুর্ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পুলিশ। মৃতদেহ গুলিকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশিষ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, মৃতদের পরিবারকে দু লক্ষ করে টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ট্যুইট করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে মৃতদের পরিবারকে দু লক্ষ টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা করেছেন তিনি। তবে এই দুর্ঘটনাটির পর পরিবহন ব্যাবস্থা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনাস্থল থেকে ২৫ মিটার রাস্তা চাকা ঘষে যাওয়ার দাগ রয়েছে। সেক্ষেত্রে অনুমান করা হচ্ছে বাসটির ব্রেক ঠিক ছিল না। এছাড়াও জাতীয় সড়কের উপর যাত্রী বোঝাই অটো চালানো নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। সব মিলিয়ে পুরো ঘটনাটির তদন্ত করছে পুলিশ।
{ads}