শুক্রবার রাতেই দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ শিশির অধিকারীকে। তাঁর জায়গায় বসানো হয়েছে শিশিরের বিরোধী হিসেবে পরিচিত জ্যোর্তিময় করকে। আর এই ঘটনা থেকেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে নন্দীগ্রামের গড় থেকে অধিকারী পরিবারকে সাফ করে দেওয়ার প্রসঙ্গ। একুশের নির্বাচন শেষ হতেই কি তবে অধিকারী দুর্গ ভাঙতে ছক সাজাতে শুরু করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী? ইঙ্গিত কিন্তু অনেকটা সেই রকমই…
{link}
২০১১ সালে রাজ্যের ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। তার পরেই শিশিরকে বসানো হয় দিঘা উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পদে। সেই থেকে শিশিরই সামলাচ্ছিলেন পর্ষদের যাবতীয় দায়িত্ব। শিশির জমানায় দিঘা এবং শঙ্করপুরের ব্যাপক উন্নতি হয়। দুই পর্যটনস্থলেই বাড়তে থাকে পর্যটকের ভিড়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম বিশ্বস্ত সৈনিক ছিলেন শিশির ও শিশির পুত্র শুভেন্দু। কিন্তু তাল কাটে একুশের নির্বাচনের ঠিক আগে।
দলনেত্রীর সঙ্গে মনান্তরের জেরে গত বছর ডিসেম্বর মাসে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন শুভেন্দু অধিকারী। তার পরেই অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলাকে তৃণমূল শূন্য করবেন বলে প্রতিজ্ঞা করেন তিনি। বিধানসভা ভোটের আগে আগে বিজেপিতে যোগ না দিলেও, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভায় হাজির হন শিশির। যেখানে তার প্রতি অনেকটা নয় প্রায় পুরোটাই আস্থা হারিয়ে যায় তৃণমূলের। তার পর থেকে ত্রিশঙ্কুর মতো ঝুলছেন তিনি। সাংসদ পদে ইস্তফা না দেওয়ায় তিনি তৃণমূলে আছেন নাকি বিজেপিতে গিয়েছেন সেই ছবিটাও স্পষ্ট নয়।
{link}
শিশির বিজেপির সভায় যাওয়ার পর থেকেই অধিকারী গড়ে ধস নামাতে ঘুঁটি সাজাতে শুরু করেন তৃণমূল নেত্রী বলে রাজনৈতিক মহলের এক অংশের ধারনা। অধিকারী শিবিরের বিরোধী গোষ্ঠী হিসেবে এতদিন যাঁরা পরিচিত ছিলেন জেলায়, তাঁদেরই দেওয়া হতে থাকে বাড়তি গুরুত্ব। যেমন, অখিল গিরি। এক সময়, অধিকারীদের চাপে কার্যত মাথা তুলতে পারতেন না অখিল। অথচ তৃণমূল জমানায় প্রতিবারই বিধায়ক হয়েছেন তিনি। তৃণমূলে অধিকারী যুগ শেষ হতেই অখিলকে তুলে নিয়ে গিয়ে বসানো হয়েছে মন্ত্রীর চেয়ারে। অখিল গোষ্ঠীর জ্যোতির্ময় করকে বসানো হল দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পদে। এর পর কোন ঘুঁটির চাল দিয়ে কিস্তিমাত করেন তৃণমূল সুপ্রিমো, এখন তাই দেখার। কিন্তু এখন যে নন্দীগ্রামে অধিকারী পরিবারের উপর বেজায় চটেছেন তিনি, তা আন্দাজ করাই যাচ্ছে। এর পাশাপাশি যদিও শিশির বাবুর কাছ থেকে এখনও কোন প্রক্রিয়া আসেনি। তিনিও যে দাঁড়িপাল্লার মাঝে বন্দি হয়ে পড়েছেন সেটাও বলা চলে। কোন দিকে ঝোলেন সেটাই দেখার বিষয়।
{ads}