নিজস্ব সংবাদদাতা,পূর্ব মেদিনীপুরঃ সকালে স্কুলে না গিয়ে স্কুলের পোশাকেই রাস্তার উপর বসে অবরোধ প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়াদের। খুদে পড়ুয়াদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন তাদের অভিভাবকরাও। কিন্তু সাতসকালে এই অবরোধ এর কারণ কী? জরাজীর্ণ ক্লাসরুম,খসে পড়ছে টালির ছাদ। তাই মেরামতের দাবিতে সাতসকালে রাস্তায় বসে অবরোধ কচিকাঁচা পড়ুয়াদের।
{link}
ঘটনাটি পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার থানার অন্তর্গত চক বহিচবেড়িয়া গ্রামের। এদিন সকালে চক বহিচবেড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুলের ক্লাস রুমে না গিয়ে ট্যাংরাখালি মেছেদা রাজ্য সড়কের উপর বসে পড়ে। সঙ্গ দেয় তাদের অভিভাবকেরাও। চক বহিচবেড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটি দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস বসছে প্রতিদিন। কিন্তু মাঝেমধ্যেই স্কুলের টালির ছাদ থেকে টালি খুলে পড়ছে ছাত্র-ছাত্রীদের মাথায়। টালি খুলে পড়ায় বেশ কিছু ছাত্র-ছাত্রী আহত হয়েছে। বর্তমানে ওই স্কুলে দেড়শ জনের বেশি ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। স্কুলের বিল্ডিং মেরামতি ও পাকা ছাদের দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল সাতটা থেকে পথ অবরোধ করে ছাত্র-ছাত্রী সহ অভিভাবকেরা। তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে পথ অবরোধ। এর কিছুক্ষণ পরেই ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায় নন্দকুমার থানার পুলিশ। অবরোধ তুলতে গেলে প্রাথমিকভাবে জনরোষের মুখে পড়ে পুলিশ। পরে অবশ্য পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেয় তারা। এ বিষয়ে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানান, আম্ফান ঝড়ের পরবর্তী সময় থেকেই স্কুল বিল্ডিং এর এই বেহাল অবস্থা। ইতিমধ্যেই পুরো বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন তারা। সবকিছু খতিয়ে দেখেও যায় শিক্ষা দপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা। কিন্তু তারপরেও স্কুল বিল্ডিং মেরামতের জন্য আর্থিক অনুমোদন পাওয়া যায়নি।
{link}
এদিন স্থানীয় অভিভাবকরা বলেন, রাজ্য সরকার রাজ্যজুড়ে উন্নয়নের জন্য একাধিক প্রকল্প গ্রহণ করেছে। তার পরেও স্কুল বিল্ডিং এর এই বেহাল অবস্থা কেন? যদিও এই প্রশ্নের উত্তর তাদের কারোর জানা নেই। অভিবাবকরা কার্যত হুঁশিয়ারি সুরে জানায়, এক সপ্তাহের মধ্যে স্কুল বিল্ডিং এর মেরামতির কাজ শুরু না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাবেন তারা। এমনকি এই এক সপ্তাহ ঝুঁকি নিয়ে তাদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে না পাঠানোর সিদ্ধান্তও নিয়েছেন তারা। বুধবার রাজ্যের শিল্প সম্মেলনের উদ্বোধনী মঞ্চে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু দাবি করেছিলেন, রাজ্যে শিক্ষা ব্যাবস্থা নতুন করে উজ্জীবিত হচ্ছে। কিন্তু বহিচবেড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হাল দেখার পরেও কি শিক্ষামন্ত্রী রাজ্যে নতুন করে শিক্ষা ব্যাবস্থা উজ্জীবিত হচ্ছে এমনটা বলবেন? আদৌ কি এটা শিক্ষা ব্যাবস্থার উন্নতির ছবি নাকি অধঃপতন এর। আসলে খেলা মেলা উৎসব আর সামাজিক প্রকল্পের নামে যে খয়রাতি শুরু হয়েছে তার শেষ কোথায়?
{ads}