তবে কি এবার নিজেদের তৈকি করা স্লোগান নিজেদেরই ঘাড়ে এসে পড়ল বিজেপির? ভোটের ফল বের হওয়ার পর এক মাস কেটে গিয়েছে। অথচ পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মানচিত্রে বিজেপির মুখ বলতে সেই শুভেন্দু অধিকারী। তিনি ছাড়া সেভাবে আর দেখা মিলছে না কোনও বিজেপি নেতার। সেই কারনেই স্বাভাবিকভাবেই ক্ষোভ দানা বাঁধছে গেরুয়া শিবিরে।
{link}
বিধানসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে আক্ষরিক অর্থেই মুখ থুবড়ে পড়ে বিজেপি। বিপুল জনাদেশ নিয়ে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু নন্দীগ্রামে শেষ হাঁসি হাঁসেন শুভেন্দুই। নির্বাচনে জয়ী হয়ে বিরোধী দলনেতা হন জায়ান্ট কিলার শুভেন্দু অধিকারী। নির্বাচনের ফল বেরনোর পর থেকে এই শুভেন্দু ছাড়া আর কারও দেখা মিলছে না বলে অভিযোগ বিজেপির নিচুতলার কর্মীদের। কথাটা শুধুমাত্র অভিযোগ নয় বাস্তবিক ক্ষেত্রে অনেকটাই সত্যিও বটে।
ভোটে বিপর্যয়ের পর থেকে বিজেপি কর্মীদের ওপর অত্যাচার শুরু হয়েছে। অভিযোগ, তৃণমূলের অত্যাচারে বিজেপির বহু কর্মী-সমর্থক ঘরছাড়া। অথচ এঁদের পাশে বিজেপির কোনও হেভিওয়েট নেতাকেই দেখা যায়নি। স্বাভাবিকভাবেই ক্ষোভ ক্রমেই পুঞ্জীভূত হচ্ছে গেরুয়া অন্দরে।
গেরুয়া শিবিরের একাংশের দাবি, বিরোধী দলনেতা হওয়ার পর একমাত্র শুভেন্দুকেই দেখা গিয়েছে দলীয় কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় যশে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলীয় এলাকা। এর মধ্যে পড়ে খেজুরিও। ঝড়ের পরে পরেই দুর্গতদের পাশে দাঁড়ান বিজেপির এই তরুণ তুর্কি নেতা। স্থানীয় বিধায়ককে নিয়ে এলাকায় ত্রাণ বিলিও করেন শুভেন্দু।
{link}
কেন শুধুই শুভেন্দু? বাকি নেতারা কোথায়? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, দল বদলের সময় শুভেন্দু প্রায় ৪০জন নেতাকে নিয়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন। নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীকে পরাজিত করেছেন। দুর্বল সংগঠন থাকা সত্ত্বেও পূর্ব মেদিনীপুরে ১৬টি আসনের মধ্যে সাতটি তুলে দিয়েছেন বিজেপির ঝুলিতে। তাই গেরুয়া শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও শুভেন্দুকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন। সেই কারণেই রাজ্য বিজেপি কেবলই ‘শুভেন্দুময়’ হয়ে উঠছে বলে ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের। অন্যদিকে সেইভাবে দেখা পাওয়া যাচ্ছে না মুকুল রায়, রাজীব ব্যানার্জির মতো হেভিওয়েট নেতাদেরও। কেন এই নিভৃতবাস? পুরোনো দলেই কি ফেরার ইঙ্গিত? বিজেপির মূল যে রাজ্যের প্রধান মুখ সেই দিলীপ ঘোষই বা কোথায় গেলেন? নেই কোন প্রশ্নেরই উত্তর।