প্রাক্তন পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর মন্ত্রীত্ব পদ থেকে ইস্তফা নেওয়া এবং নানান কার্যকলাপে একেই উত্তপ্ত রয়েছে সাড়া বাংলা। তার ওপর আজ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বনদপ্তর বিভাগের মন্ত্রী এবং ডোমজুড়ের বিধায়ক রাজীব ব্যানার্জীর ছবির পোস্টারে গোটা রাজ্যজুড়ে উত্তাল সৃষ্টি করল। “যারা দুর্নীতিগ্রস্ত, তাদেরকেই নিয়ে আসা হচ্ছে সামনের সারিতে…এ যে কি যন্ত্রনা তা বলে বোঝাতে পারব না”, শনিবারে হাওড়ার নবীন সংঘে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে রাজীব বাবুর উল্লিখিত মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হন দলের সদস্যরা। পরবর্তীকালে “আমরা দাদার অনুগামী”, লেখা পোস্টারই আবার নতুন করে সংঘর্ষের সৃষ্টি করল অন্দরমহলে।
একটা সময় হাওড়ার উদয়নারায়নপুর ছিল বামেদের লাল দুর্গ। সেই সময় কংগ্রেস এবং পরবর্তী সময় তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকা কাঁধে নিয়ে চলার সাহস দেখাতে পারতেন না কোনো কর্মী। বামেদের সেই দুর্গে ২০১১ সালে ফাটল ধরিয়ে দেয় তৃণমূল কংগ্রেস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন উদয়নারায়নপুরের বিভিন্ন জায়গায় তিনি হাতে গোনা কয়েকজন কর্মীকে নিয়ে বারংবার ছুটে গেছেন অত্যাচারিত কংগ্রেস কিংবা তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্যে। ২০০৯-এর লোকসভা থেকে শুরু করে ২০১৬-এর বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই থেকেছেন। শেষ ২০১৮-এর পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোটের অংকে তৃণমূল কংগ্রেসের জয়জয়কার লক্ষ্য করা গেছে। সামগ্রিক এই আন্দোলনে যারা বামেদের বিরুদ্ধে প্রথম সারিতে দাঁড়িয়ে কঠিন লড়াইটা করেছেন তাদেরই একজন তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী এবং উদয়নারায়নপুরের বিধায়ক সমীর পাঁজা। রাজীব বন্দ্যোপাধায়ের গলার সুর, বেসুরো হতেই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানালেন সমীর বাবু। রাজীব ব্যানার্জীর ব্যাপারে তিনি কি বললেন একবার শুনে নেওয়া যাক…
রাজীব ব্যানার্জীর করা মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন তৃণমূলের শীর্ষস্থানীয় নেতা অরুপ রায়ও। তিনি জানিয়েছেন, কর্মীরা যারা দলের সম্পদ, তারা ঐক্যবদ্ধ আছে। তিনি আরও জানান, “যারা মাকে গালাগালি করে তাদের সম্বন্ধে কি বলবো !“ দেখে নেওয়া যাক তারই বক্তব্যের কিছু অংশ…
শুভেন্দু অধিকারীর সূত্র ধরেই ধীরে ধীরে রাজ্যে নির্বাচনের প্রাক্কালে তৃণমূল দলের ভাঙন তীব্র হতে দেখা যাচ্ছে। একের পর এক শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের দলের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ পারদ চড়াচ্ছে রাজনৈতিক মহলে। ফলে, শেষ পর্যন্ত কার জোরে মুকুল জয় হয় সেটাই দেখার বিষয়।