header banner

মিষ্টি ব্যবসায়ীকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের যাবজ্জীবনে কারাদণ্ড

article banner

সুদেষ্ণা মন্ডল , ডায়মন্ডহারবার :-  ২০১৪ সালে ফলতার সাধুরহাটে এক মিষ্টি ব্যবসায়ীকে ভাড়াটে খুনি দিয়ে খুন করা আভিযোগ উঠে।এই খুনের তদন্ত নামে ডায়মন্ডহারবার পুলিশ জেলা পুলিশ। পুলিশ তদন্ত নেমে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকা অভিযোগে  ন'জনকে গ্রেফতার করে। এই মধ্যে একজন আসামী বিচার চলাকালীন মারা যায়। প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২৯ মার্চ  রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ ফলতার সহরারহাট মোড়ের ওই মিষ্টির দোকানে ক্রেতা সেজে ঢুকে দই খেয়ে ছয় দুষ্কৃতী মালিক কার্তিক ঘোষকে গুলি করে ও কুপিয়ে খুন করে। দোকানের সিসিটিভির ফুটেজ দেখে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের অফিসাররা ফলতার তেলিয়া গ্রাম থেকে কাদের শেখ, মথুরাপুরের লালপুর গ্রাম থেকে মুজফ্ফর মিস্ত্রি ও সেলিম মিস্ত্রি, রামনগরের বাংলা গ্রাম থেকে আখতার মোল্লা ও ডায়মন্ডহারবারের আমিরা গ্রাম থেকে সাহদাত পাইক নামে পাঁচ জনকে ধরে।তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে  মোট ন'জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ । ধৃতেরা অপরাধের কথা শিকার করে জানায়, ওই মিষ্টি ব্যবসায়ীর সঙ্গে আর্থিক কারণে বিবাদের জেরে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী তাদের খুনের জন্য ‘সুপারি’ দেন।

তদন্তকারী দল সেই সময় দাবি করে সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গিয়েছে, মুজফ্ফর কার্তিককে গুলি করছে। তার পরে কাদের চপার দিয়ে কোপায়। এই পিছনের কারণ হিসেবে তদন্তকারীরা জানায়, মাস খানেক আগে স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে কার্তিক। ওই ব্যবসায়ী মাস খানেক আগে তাকে খুনের হুমকি দেয় । এরপর ফলতার কুখ্যাত দুষ্কৃতী কাদেরকে সুপারী দেয় খুনের । তার বিরুদ্ধে ফলতা থানায় ব্যাঙ্ক ডাকাতি-সহ একাধিক মামলা রয়েছে। ঘটনার মাস ছয়েক আগে সে জেল থেকে ছাড়া পায়। কাদের কবুল করে, ওই ব্যবসায়ী তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। কার্তিককে খুনের জন্য কাদের-সহ ছ’জনকে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা হয়েছিল। অগ্রিম ১৯ হাজার টাকা দেওয়া হয় কাদেরকে।এই খুনের ঘটনায় মঙ্গলবার আট জনকে আসামীকে সাজা শোনায় ডায়মন্ডহারবার মহকুমা আদালত।

{link}

মঙ্গলবার সকাল থেকে ডায়মন্ড হারবার মহকুমার আদালত চত্বর পুলিশের কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনিতে মুড়ে ফেলা হয় । কাদের শেখ, আকবর উদ্দিন মোল্লা, শাহজাদ পাইক, মোজাফফর ,মিস্ত্রি সহদেব আলী শেখ ,উত্তম দলুই, সাইদুল সেখ রাজা খান, সেলিম মিস্ত্রি এই আটজনের  মধ্যে সাতজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে আদালত । এছাড়াও এই ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত রাজু খানকে চোদ্দ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয় । এ বিষয়ে সরকারি আইনজীবী স্বপন পাইক বলেন, ২৯ মার্চ ২০১৪ সালে ফলতা থানার এক প্রসিদ্ধ মিষ্টি ব্যবসায়ী কার্তিক ঘোষকে গুলি করে কুপিয়ে খুন করে দুষ্কৃতীরা। এরপর পরিবারের পক্ষ থেকে ১১ জনের বিরুদ্ধে ফলতা থানাতে অভিযোগ দায়ের করে পরিবারের লোকজনেরা। তদন্তে নেমে ফলতা থানার পুলিশ  ন'জনকে গ্রেফতার করে। এই ঘটনার অন্যতম দুই অভিযুক্ত শামিম মোল্লা ও গোপাল সরদার ঘটনার পর থেকেই পলাতক। দীর্ঘ কয়েক বছরের আইনি লড়াই ও সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে নয় জন অভিযুক্তের মধ্যে একজন অভিযুক্ত আইনি প্রক্রিয়া চলার সময়ই মারা যায়। আটজন অভিযুক্তকে মহামান্য বিচারক জয়প্রকাশ সিংয়ের ইসলাসে পেশ করলে সাতজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় এবং একজনকে চোদ্দ বছরের জেল দেন।

মোট ৩৫ জন সাক্ষীকে পেশ করা হয় আদালতে। ডায়মন্ড হরবার আদালতের এই নির্দেশে খুশি নন মৃতের পরিবারের লোকজনেরা। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উচ্চ আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে তারা।মৃত কার্তিক ঘোষের মেয়ে মোনালিসা ঘোষ বলেন, যারা আমার বাবাকে নৃশংসভাবে খুন করল তাদের এই শাস্তি কাম্য নয়। আমরা উচ্চ আদালতে যাব। নিশংস খুনের সঙ্গেও যুক্ত থাকা অভিযুক্তরা ভারতীয় আইন ব্যবস্থা দুর্বলতা সুযোগ নিয়ে মৃত্যুর হাত থেকে পার পাবেনা। আমরা চেয়েছিলাম এই অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তি দিক আদালত। আমরা এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উচ্চতর আদালতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি শুরু করছি।

{ads}

news South 24 Paragana West Bengal Crime সংবাদ

Last Updated :