header banner

বাঙালির আদি দুর্গাপুজো, পৌরাণিক রীতিনীতি মেনে আজও গ্রামবাংলায় পূজিত দেবী বাসন্তী

article banner

নিজস্ব সনবাদদাতা, দক্ষিণ দিনাজপুর: চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের বাসন্তী পুজোই বাঙালির আদি দুর্গাপুজো। তবে এখন আশ্বিন শুক্লপক্ষের দুর্গাপুজোই আড়ম্বরে পালিত হয়। দক্ষিণ সিঙ্গিছড়া আচার্য পাড়া পঞ্চায়েত অফিসের সন্নিকটে  দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে বাসন্তী পূজা করা হচ্ছে পৌরাণিক রীতিনীতি মেনে । আগামী  ২৮ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত চলবে চারদিন ব্যাপী বাসন্তী পূজা। একটা সময় এই বাসন্তী পূজা এলাকা বাসীরা মিলে শুরু করলেও বর্তমানে এটি সার্বজনীন রূপ পেয়েছে । দূরদূরান্ত থেকে ভক্তদের সমাগম ঘটে এই পুজোয় ।এখানে প্রতি বছর নবমীতে ভক্তদের জন্য আয়োজন করা হয় মহাপ্রসাদের। পুজোর দোর গোড়ায় এসে ঠিক যেরকম ভাবে চলছে মূর্তি নির্মাণের শেষ মুহূর্তের কাজ, তার সাথেই তাল মিলিয়ে চলছে মন্ডপ প্রস্তুতির কাজও। দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে মূর্তি নির্মাণ করছেন স্থানীয় মৃৎশিল্পীরা, শিবব্রত শর্মা চৌধুরী, শংকর শর্মা চৌধুরী। বর্তমানে তাদের ছেলেরাও এই কাজে হাত লাগাচ্ছেন। মৃৎশিল্পীর অনবদ্য হাতের ছোঁয়ায় মূর্তি নির্মাণ হচ্ছে । জোর কদমে চলছে পূজোর চূড়ান্ত ব্যস্ততা। পুজোর সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন তাপস আচার্জী, কোষাধক্ষ্য পঙ্কজ আচার্য এবং সভাপতি মানিক শুক্ল বৈদ্য।
{link}
বাসন্তী পূজার ইতিহাস সম্পর্কে কিছু তথ্য এসেছে আমাদের কাছে। এখন যতই আমরা আশ্বিন মাসে দুর্গাপুজো করি না কেন, বাঙালির  আদি দুর্গাপুজো হত এই চৈত্র মাসেই। পুরাণ অনুযায়ী, সমাধি নামক বৈশ্যের সঙ্গে মিলে রাজা সুরথ বসন্তকালে ঋষি মেধসের আশ্রমে দেবী দুর্গার আরাধনা করেন। যা পরে বাসন্তী পুজো নামে প্রসিদ্ধ হয়। দেবী দুর্গার প্রথম পুজোরী হিসাবে চণ্ডীতে রাজা সুরথের উল্লেখ রয়েছে। সুরথ সুশাসক ও যোদ্ধা হিসেবে বেশ খ্যাত ছিলেন। কোনও যুদ্ধে নাকি তিনি কখনও হারেননি। কিন্তু প্রতিবেশী রাজ্য একদিন তাঁকে আক্রমণ করে এবং সুরথ পরাজিত হন। এই সুযোগে তাঁর সভাসদরাও লুটপাট চালায়। কাছের মানুষের এমন আচরণে স্তম্ভিত হয়ে যান রাজা সুরথ। বনে ঘুরতে ঘুরতে তিনি মেধাসাশ্রমে পৌঁছোন, ঋষি তাঁকে সেখানেই থাকতে বলেন। কিন্তু রাজা শান্তি পান না। এর মধ্যে একদিন তাঁর সমাধির সঙ্গে দেখা হয়। তিনি জানতে পারেন, সমাধিকেও তাঁর স্ত্রী এবং ছেলে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। তবুও তিনি বৌ-ছেলের ভালোমন্দ এখনও ভেবে চলেছেন। তাঁরা দুজনেই তখন ভাবলেন, যাদের কারণে তারা সব কিছু হারিয়েছে, তাদের ভালো আজও তারা চেয়ে যাচ্ছেন। ঋষিকে একথা বলায় তিনি বলেন সবই মহামায়ার ইচ্ছা। এরপর ঋষি মহামায়ার কাহিনি বর্ণনা করেন। ঋষির উপদেশেই রাজা কঠিন তপস্যা শুরু করেন।পরে মহামায়ার আশীর্বাদ পেতেই বসন্ত কালের শুক্ল পক্ষে রাজা পুজো শুরু করেন। এই ভাবেই শুরু হয় বাসন্তী পুজো।
{ads}
 

south dinajpur nres basanti pujo history সনবাদ

Last Updated :