নিজস্ব সংবাদদাতা: দরজা আটকে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে নিজের স্ত্রী ও মেয়েকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার চেষ্টা দাপুটে তৃণমূল নেতার। ভয়ে এগিয়ে আসেনি এলাকাবাসী বলে অভিযোগ। সারা রাত চলে নেতার তাণ্ডব। ঘটনাটি ঘটেছে নদীয়ার কৃষ্ণগঞ্জ থানার রাধা গোবিন্দ পাড়ায়। জানা যায় রাধা গোবিন্দ এলাকার বাসিন্দা পিন্টু সেন, সেখানকার দাপুটে তৃণমূল নেতা হিসেবে পরিচিত। সূত্রের খবর, শাসকদলের কথা বলে এলাকার মানুষদের বিভিন্ন বিষয়ে হুমকি দেখাতেন তিনি। শুধু এলাকার মানুষদেরই নয়, মদ্যপ অবস্থায় এসে নিজের স্ত্রী ও মেয়ের উপরও মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার করতেন তিনি। অভিযোগ গতকাল রাতেও হঠাৎ মদ্যপ অবস্থায় এসে নিজের স্ত্রীকে মারধর শুরু করেন তিনি। তারপরে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। দরজা আটকে দেওয়ার আগেই কোনরকম ভাবে দরজা খুলে পালিয়ে যায় তার স্ত্রী এবং একাদশ শ্রেণির ছাত্রী, তাঁদের একমাত্র কন্যা। দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে থাকে গোটা বাড়িতে। এরপর শুরু হয় স্ত্রী ও কন্যার খোঁজে তল্লাশি। সারা গ্রাম তিনি দাপিয়ে বেড়ান বলে অভিযোগ। গ্রামবাসীরা ভয়ে জলন্ত বাড়ির আগুন নিভাতে আসেনি। তবে কোন রকম ভাবে গ্রামবাসীদের সাহায্যে স্ত্রী ও কন্যা প্রাণে বেঁচে যায়। পরিবারের দাবি, এটি প্রথমবার নয়, এর আগেও বিয়ের পর থেকেই সে অত্যাচার চালাতো একইভাবে।
{link}
এই বিষয়ে অভিযুক্ত পিন্টু সেনের পরিবারের তরফ থেকে কৃষ্ণগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্ত পিন্টু সেন আপাতত পলাতক। তার খোঁজে তদন্ত শুরু করেছে কৃষ্ণগঞ্জ থানার পুলিশ। এই বিষয়ে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার স্ত্রী, সোমা সেন বলেন, বিয়ের পর থেকে এই ভাবে অত্যাচার চালাতেন অভিযুক্ত পিন্টু সেন। তিনি ভেবেছিলেন আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে তাঁর স্বামির ব্যাবহার। কিন্তু এখনো তার অত্যাচার একই ভাবে জারী রয়েছে। তিনি চাইছেন তাঁর এবং তাঁর কন্যার যাতে কোন ক্ষতি না হয় সেই ব্যবস্থাই করুক প্রশাসন।
ওই এলাকার বিজেপি নেতা শিবনাথ মুখার্জি বলেন, এটি খুব নিন্দনীয় ঘটনা। মূলত শাসকদলের ছত্রছায়ায় রয়েছে বলেই তার এই বাড়বাড়ন্ত। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা পিন্টু সেন যে ঘটনা ঘটিয়েছে, আমরা প্রশাসনকে দাবি জানাচ্ছি অবিলম্বে আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে। এ বিষয়ে সিপিএম নেতা জয়দেব হাওলাদার বলেন, এখন তৃণমূলের কালচার এটাই হয়ে দাঁড়িয়েছে। সারাদিন মদ্যপান করে থাকা আর শাসকদলের ক্ষমতা দেখিয়ে নিজের বউ বাচ্ছাদের উপরে অত্যাচার চালানো। গতকাল রাতে যদি গ্রামবাসীরা না বাঁচাতেন তাহলে তাঁর স্ত্রী ও কন্যা দুজনাই জ্যান্ত আগুনে পুড়ে মারা যেত।
{link}
যদিও বিরোধীদের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছে কৃষ্ণগঞ্জ তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি প্রণব বিশ্বাস, তিনি বলেছেন যে পিন্টু সেন তাঁদের কোন প্রথম সাড়ি কিংবা দ্বিতীয় সারির কোন নেতা নয়, সাধারণ একজন দলের কর্মী হতে পারে। কিন্তু তিনি যে ঘটনা কাল ঘটিয়েছেন আমরা তার তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছি। আমরাও প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করব যাতে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অবিলম্বে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
{ads}