শেফিল্ড টাইম্স ডিজিটাল ডেস্ক : দীর্ঘ বিতর্কের পর বুধবার রাতে লোকসভায় ভোটাভুটিতে পাশ হয়ে গিয়েছে ওয়াকফ সংশোধনী বিল (Waqf Amendment Bill)। এবার রাজ্যসভাতেও পাশ হয়ে গেল ওয়াকফ সংশোধনী বিল। পক্ষে ভোট পড়ে ১২৮ টি, বিপক্ষে ভোট পড়ে ৯৫ টি। কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু ‘ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল’ পেশ করেন। কিরেন রিজিজুর প্রতিটি বক্তব্যকে পাল্টা জবাব দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার মুখ্য সচেতক নাদিমুল হক৷ যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন, এই বিল সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক। একই সুরে এদিন মোদি সরকারের মুখোশ খুলে দেন তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা দেব।
{link}
তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন এদিন তীব্র কটাক্ষ করেন মোদি সরকারকে। তাঁর অভিযোগ, নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতেই সংসদে ওয়াকফ সংশোধনী বিল এবং মণিপুর নিয়ে আলোচনা টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে গভীর রাত পর্যন্ত। এটা সম্পূর্ণ পূর্বপরিকল্পিত। ওয়াকফ সংশোধনী বিল প্রসঙ্গে নাদিমুল হকের তোপ, হিন্দু-মুসলিম বিভেদ তৈরি করার জন্যই মোদি সরকারের এই বিল ৷ আজ এই বিলের মাধ্যমে মসজিদের সম্পত্তি কাড়া হবে, আগামিকাল মন্দির, গির্জার সম্পত্তির দিকেও হাত বাড়াবে স্বেচ্ছাচারী অগণতান্ত্রিক এই সরকার ৷ এই বিল দেশের কোটি কোটি মুসলিমের ভাবাবেগে আঘাত। তিনি প্রশ্ন তোলেন, জেপিসির রিপোর্টে বলা হয়েছে শুধু ইসলাম ধর্ম পালন করলেই হবে না, তাঁকে দেখাতেও হবে যে তিনি তা পালন করছেন। তাহলে এবার থেকে কি মুসলিমদের কোনও জায়গায় গিয়ে নিজেদের রেজিস্ট্রেশন করতে হবে? এটি পুরোপুরি অসাংবিধানিক। ওয়াকফ বাই ইউজার্স প্রসঙ্গে নাদিমুল হক বলেন, ইসলাম ধর্মে বরাবরাই মৌখিক ঘোষণা গ্রাহ্য। এই বিলে বলা হয়েছে অনুষ্ঠানিক, সরকারি নথি দিতে হবে। এই নির্দেশ পুরোপুরি ইসলামের পরিপন্থী। এমন হাজার হাজার প্রথা নষ্ট করে দেবে এই বিল। ওয়াকফ সংশোধনী বিল শুধুমাত্র সাংস্কৃতিক তাণ্ডব ছাড়া আর কিছুই নয়। নাদিমুলেক কটাক্ষ কিসিকা বাপ কা হিন্দুস্তান নেহি হ্যায়।
{link}
নাদিমুলের কথায়, ওয়াকফ বোর্ডে ৪ সদস্যের অমুসলিম প্রতিনিধি রাখার অর্থ কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণ জোরদার করা এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের নিয়ন্ত্রণ হ্রাস করা। বিলটি পুনরায় সংসদীয় কমিটিতে পাঠিয়ে তা খতিয়ে দেখার দাবি করেন তিনি। তৃণমূল সাংসদ আরও বলেন, রাজ্য ওয়াকফের ক্ষমতা কমানো হয়েছে এবং এই বিল যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা দাবি করেছিলেন, সবকা সাথ, সবকা বিকাশ নীতি ত্যাগ করতে হবে। বিজেপির সমর্থকদের সঙ্গেই থাকতে হবে। সেই মন্তব্যকে কটাক্ষ করেই নাদিমুল হক বলেন, আপনারা কি বিরোধী দলনেতার বক্তব্যকে সমর্থন করেন? তিনি বলেন, ২০২১ সালের মত ২০২৬ সালের রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনেও বিজেপি পরাজিত হবে। কারণ, বাংলা বিভেদের নয়, ঐক্যের মাটি। বাংলার মানুষ প্রতিহিংসাপরায়ণ বিজেপিকে উচিত শিক্ষা দেবেন।একইরকমভাবে এই বিলকে কেন্দ্র করে রাজ্যসভা কক্ষে দাঁড়িয়ে মোদি সরকারের তীব্র সমালোচনা করে তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা দেব বলেন, হিন্দু-মুসলিমদের বিভেদ ঘটানোর জন্যই নিয়ে আসা হয়েছে অসাংবিধানিক এই ওয়াকফ সংশোধনী বিল৷ এই বিলের কোনও ভিত্তি নেই৷ একদিন বিজেপি সরকার নিশ্চয়ই হারবে৷ যেদিনই তারা পরাজিত হবে, সঙ্গে সঙ্গে আমরা এই বিলের মধ্যে থাকা জনবিরোধী ধারা গুলি পরিবর্তন করে দেব৷
{ads}