নিজস্ব সংবাদদাতা,শিলিগুড়িঃ ক্যাঙ্গারু, প্রানীটি ভারতীয় কিংবা পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে অপরিচিত কোন প্রানী নয়। সাধারণ মানুষ প্রায়সই এই ক্যাঙ্গারু টিভির পর্দায় দেখে থাকেন। কিন্তু স্বচক্ষে এই ক্যাঙ্গারু কেউ দেখেছন কি? প্রশ্নের উত্তরটা না হওয়াই স্বাভাবিক। কারন এই দেশের জঙ্গলের প্রানী ক্যাঙ্গারু নয়, প্রানীটি অস্ট্রেলিয়ার জঙ্গলের অন্যতম পরিচিত একটি জীব। ভারতবর্ষে ক্যাঙ্গারু দেখা গেলেও তা দেখা যায় মাত্র কয়েকটি নির্দিষ্ট চিড়িয়াখানায়।
সেই ক্যাঙ্গারুই এবার উদ্ধার হল উত্তরবঙ্গ থেকে, গজলডোবার কাছে ক্যানেল রোড থেকে শুক্রবার রাতে উদ্ধার হয় ২ টি ক্যাঙারু শাবক, পাশাপাশি শিলিগুড়ির ফাঁড়াবাড়ি থেকে উদ্ধার ১ টি ক্যাঙারু। বনদপ্তর সূত্রে খবর এদিন স্থানীয়রা ১টি ক্যাঙারু দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে বনদপ্তরে খবর দেয়। খবর পেয়ে বনদপ্তরের কর্মীরা এসে জলপাইগুড়ি জেলার গাজোলডোবা এলাকার ক্যানেল রোড থেকে দুটি ক্যাঙ্গারু উদ্ধার করে একটি স্করপিও গাড়ি থেকে। তবে প্রশ্ন হল, প্রথমে ২ টি ও পরে ১টি ক্যাঙারু কি করে বা কোথা থেকে আসলো শিলিগুড়িতে? সম্পূর্ন ঘটনার তদন্ত শুরু করে বনবিভাগ। সেই তদন্তেই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য|
{link}
অস্ট্রেলিয়ান ক্যাঙারু উদ্ধার প্রসঙ্গে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, এই পাচার কান্ডে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ১৯৫৭ ফরেস্ট অ্যাক্টের ধারায় মামলা করা হয়েছে ধৃতদের বিরুদ্ধে, যার সর্বনিম্ন ৭ বছর এবং সর্বোচ্চ ১৭ বছর জেল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বনদপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে, ক্যাঙ্গারুগুলিকে চোরাই পথে বাংলাদেশ থেকে ভারত হয়ে নেপাল দিয়ে চীনে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। উদ্ধার হওয়া ক্যাঙ্গারুগুলিকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর উত্তরবঙ্গের বেঙ্গল সাফারি তে ছাড়া হবে। পাচার চক্রের সক্রিয়তা সম্পর্কে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান,পাচার চক্র আগে অনেক বেশি ছিল বর্তমান সরকারের আমলে অনেকটাই কমেছে।
{link}
৭৯৮৮.৮৬ কিলোমিটার, আকাশপথে এটাই সর্বনিম্ন দূরত্ব ভারতবর্ষ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে। কিভাবে এতো বৃহৎ পশু পাচার চক্র চলছে প্রশাসনের চোখের আড়ালে, বর্তমানে এটি অন্যতম বড়ো একটি প্রশ্ন। কারন এহেন পশু পাচারের খবর এই এলাকায় নতুন কিছু নয়। বেলাকোবা রেঞ্জে পশু পাচার আটক হওয়ার খবরের সংখ্যা বেড়েছে কয়েকদিন যাবৎ, বনদপ্তর ও অফিসারদের তৎপরতায় তক্ষক থেকে শুরু করে একাধিক বেআইনি পশু পাচার রোধ হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হল এতোদিন কি তবে চোখ বন্ধ করে ছিল প্রশাসন? আদৌ কী সমস্ত পাচার আটকানো সম্ভব হচ্ছে পাহাড়ে? নাকি বড়োসড়ো পাচার আড়াল করতে ছোট কিছু পাচারের সংবাদ তুলে ধরা হচ্ছে। আড়ালে কি রমরমিয়ে চলছে পশু পাচারের ব্যাবসা? রয়েছে একাধিক প্রশ্ন… কিন্তু উত্তর দেবে কে? এহেন অবস্থায় দুই দিন পর শিলিগুড়ি থেকে ব্রাজিলের অ্যানাকোন্ডা উদ্ধার হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবেনা। পাচার চোখের আড়ালেই হচ্ছে নাকি জেনে শুনেই চোখ বন্ধ রয়েছে প্রশাসনের? উত্তর জানা নেই।
{ads}