একসময় তা ছিল কম্পিটিটিভ লাইব্রেরি, অর্থাৎ পড়াশোনা করা যায়গা। অথচ বর্তমান সময়ে সেখানেই হয়ে গেল দলীয় কর্মিসভা, অর্থাৎ রাজনৈতিক কেন্দ্র। আসানসোলের এই ঘটনায় নাম জড়িয়েছে খোদ শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের। আসানসোলের কুলটির ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে স্থানীয় এলাকা সহ রাজনৈতিক মহলে। সরকারি গ্রন্থাগারকে কেন দলীয় কাজে ব্যবহার করা হল? প্রশ্ন বিরোধীদের। তাঁদের কটাক্ষ, সরকার আর দল মিশিয়ে ফেলেছে তৃণমূল! বিতর্কের মুখে পড়ে সাফাই গেয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা শিবদাস রায়। তিনি বলেন, পুরনিগমের কাছে অনুমতি নিয়েই ভবন ব্যবহার করা হয়েছে। তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, যেখানে গ্রন্থই নেই তার নাম গ্রন্থাগার হয় কি করে?
কুলটির ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের ওই গ্রান্থাগারটির উদ্বোধন করেন তৎকালীন তৃণমূল নেতা তথা আসানসোল পুরনিগমের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি। বর্তমানে তিনি বিজেপি নেতা। বেকার যুবক-যুবতীরা যাতে গ্রন্থাগারে বসে চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারেন, তার জন্যই করা হয়েছিল লাইব্রেরি। সেখানেই হয়ে গেল কর্মিসভা।
{link}
গ্রন্থাগার ভবনে তৃণমূলের কর্মিসভা করা যে উচিত হয়নি, তা মেনে নিয়েছেন পুরপ্রশাসক মন্ডলীর সদস্য মীর কাসিম। তিনি বলেন, এটা করা যায় না। তবে পুর-প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে এই কর্মিসভা হয়েছে। পুর-প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, গ্রন্থাগার নয়, গ্রন্থাগারের কাজে লাগানোর ইচ্ছে ছিল। এখনও তা করে ওটা যায়নি। ভ্যাকসিনের কাজেও ব্যবহার করা হয়েছে ভবনটি। আমার অনুমতি নিয়েই নির্ধারিত ভাড়া জমা দিয়ে ওরা মিটিং করেছে। জিতেন্দ্র বলেন, আমি নিজে গ্রন্থাগারটি উদ্বোধন করেছিলাম। তিনি বলেন, যাঁর যেরকম রুচি, সেরকম কাজ করবে। আমার ইচ্ছে ছিল এই ধরনের লাইব্রেরি তৈরি করা। যাতে ছেলেমেয়েরা নিজেদের তৈরি করে চাকরি পেতে পারে। বর্তমানে যাঁরা আছেন তাঁরা ভাবছেন এসব করার দরকার নেই। পার্টি করলেই হবে। দেওয়াল লিখলেই হবে। আর ৫০০ টাকা করে লক্ষীর ভান্ডার পেলেই হবে!
অর্থাৎ বিষয়টিকে কেন্দ্র করে জল গড়িয়েছে অনেকদূর। যদিও এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের দলীয় শীর্ষ নেতৃত্বের থেকে এখনও কোনরকম প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে আসানসোলেই তৃণমূলের অন্দরে যে একটা অংশের নেতা কর্মীদের মধ্যে এই নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে এই কথা স্পষ্ট।
{ads}