সুদেষ্ণা মন্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনাঃ ঠাকুমার মন্তব্য, মেয়েরা নাকি ভোগের বস্তু। আর সেই ভোগের শিকার তার নিজের আট বছরের ফুটফুটে নাতনি। দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রীকে লাগাতার যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তার নিজের বাবা ও কাকার বিরুদ্ধে। সব জেনেও চুপ ঠাকুমা। তাই অবশেষে ডায়মন্ড হারবার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেন নির্যাতিত নাবালিকার মা। ঘটনাটি ডায়মন্ড হারবার পুরসভার ১৪ নং ওয়ার্ডের নুনগোলা এলাকার। অভিযুক্ত বাবার নাম অনুপ পুরকাইত এবং তার কাকার নাম স্বরুপ পুরকাইত।
{link}
নাবালিকার মায়ের অভিযোগ, মেয়ে জন্মানোর পর দেড় বছর বয়স থেকেই বাড়িতে ওই নাবালিকার গোপনাঙ্গে হাত দিয়ে যৌন নির্যাতন চালাতেন বাবা ও কাকা। এই নিয়ে একাধিকবার প্রতিবাদও করেন তিনি। কিন্তু তাতে কোন ফল হয়নি। এমনকি শাশুড়িকে এই ঘটনার কথা জানালে তিনি বলেন, মেয়েরা ভোগের বস্তু। তাই তার ছেলেদের কোন দোষ নেই। অভিযোগ, এরপর থেকেই লাগাতার ওই নাবালিকার উপর যৌন নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছিলেন বাবা ও কাকা। দিনের পর দিন মেয়ের উপর যৌন নির্যাতনের ঘটনা দেখে বাধ্য হয়ে গত ১ সপ্তাহ আগে ডায়মন্ড হারবার মহিলা থানার দ্বারস্থ হন ওই মহিলা। কিন্তু মহিলা থানা তাদের অভিযোগ নিতে অস্বীকার করেন। পরবর্তীতে স্বেচ্ছাসেবী এক মহিলা সমিতির দ্বারস্থ হন তিনি।
{link}
ওই মহিলা সমিতির তত্ত্বাবধানে সোমবার ডায়মন্ড হারবার থানায় বাবা ও কাকার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিত নাবালিকার মা। অন্যদিকে এই ঘটনার অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত বাবা ও কাকাকে আটক করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ডায়মন্ড হারবার থানার পুলিশ। সৃষ্টির শুরু থেকেই মেয়েদের মায়ের চোখে দেখা হয়। বৈদিক যুগ থেকে মেয়েদের পূজাও করা হয়। কিন্তু বর্তমান সমাজের একজন প্রাপ্তবয়স্কা মেয়েই আর একজন মেয়েকে ভোগের বস্তু হিসেবে মনে করেন। নিজের সন্তানকে বাঁচাতে বিসর্জন দেন নিজের নারীসত্ত্বাকে। কথায় আছে অন্যায় যে করে এবং অন্যায় যে সহে তারা দুজনেই সমান অপরাধী। জন্মের পর থেকেই একটি শিশু মায়ের পর বাবকেই বেশি বিশ্বাস করে সবচেয়ে বেশি। একজন মেয়ের কাছে তার বাবা তার রক্ষাকর্তা। কিন্তু সেই বাবাই নিজের মেয়ের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে চান। নিজের পিতৃতুল্য কাকা যখন নিজের সন্তান কেই ভোগের বস্তু হিসেবে মনে করেন তখন তাদের কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তি হওয়া উচিত। রক্ষকই যদি ভক্ষক হয়ে ওঠে তবে মানুষ বাঁচবে কিভাবে? নিজের বাবা কে সন্তান বিশ্বাস করবে না তো কাকে করবে? মানবসমাজে মানুষ সভ্য হয়ে উঠলেও আজও তার মধ্যে যে কিছু পিশাচ অবশিষ্ট রয়েছে তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে এই ঘটনা।
{ads}