header banner

অভাবে চোর, স্বভাবে নয়

article banner

করোনা কাজ কেড়েছে বহু মানুষের।দুবেলা দুমুঠো খাবার জগাতে মাথায় হাত পরছে অনেকের।কেউ পেয়েছেন নতুন রোজগার আবার অনেকেই থেকে গেছেন বেরোজগেরে।তাই অভাবে চোর, স্বভাবে নয়। সেরমই এক ঘটনা ঘটল মুর্শিদাবাদে।লকডাউনে কাজ হারিয়ে গত কয়েকদিন ধরে বহরমপুর শহরে সাইকেল চুরি করে  বেড়াচ্ছিলেন এক ব্যক্তি। সোমবার সকালে বহরমপুর টাউন তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি নাড়ুগোপাল মুখার্জীর বাড়ির সামনে থেকে একটি সাইকেল চুরি করতে গিয়ে ধরা পরে যান ওই ব্যক্তি। চোর ধরা পড়ার খবর রটে যেতেই সাথে সাথেই ওই এলাকাতে জড়ো হয়ে যায় প্রচুর লোক।তারপর শুরু হয়ে যায় চোরকে দু-এক থাপ্পড় মারা।

 {link}
চোর  যখন মনে মনে শ্রীঘরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তখনই তার ডাক পড়ে নাড়ুবাবুর বাড়িতে। মনে মনে আরও এক প্রস্থ মার খাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে নাড়ুবাবুর বাড়িতে ঢুকে চোরের চক্ষু চড়কগাছ। ঘরের ডাইনিং টেবিলে তার জন্য থরে থরে সাজানো রয়েছে ভাত, ডাল , মাছ , মিষ্টি থেকে শুরু করে আরও নানা পদ। যেন ভূতের রাজার বরে সব ইচ্ছে পূর্ণ হলো চোরের। চোর যখন টেবিলে বসে কোন পদ ছেড়ে কি খাবে ভাবছে  তখনই নাড়ুবাবু নিজে এসে অভয় দিলেন চোরকে। জেল যাত্রা তো করতে হবেই না, যদি চোর চায় তবে তার জন্য ছোটোখাটো কাজের ব্যবস্থাও উনি করে দেবেন। 

{link}
ঘটনার সূত্রপাত দিন কয়েক আগে। বহরমপুরের রেশম ঘর মোড় থেকে হটাৎই একটি দামি সাইকেল চুরি হয়ে যায়। তারপর থেকে সতর্ক হয়ে যান এলাকার বাসিন্দারা। সোমবার সকালে সকলে যখন নিজের কাজে ব্যস্ত তখন আবার ওই এলাকাতে একটি সাইকেল চুরি করতে যায় ওই ব্যক্তি। কিন্তু এবার তার কপাল খারাপ থাকায় নাড়ুবাবুর বাড়ির নিরাপত্তা রক্ষীদের হাতে ধরা পড়ে যায় ওই চোর। দু-এক থাপ্পড় মারতেই চোর বলে বসে-আসলে সে পেশাদার চোর নয়।  তাই কিভাবে চুরি করে তা এখনও রপ্ত করে উঠতে পারেনি। কাঁচা হাতে চুরি করতে গিয়ে তাই ধরা পরে গেছে সে। 
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চোর জানায় -তার বাড়ি বহরমপুর শহরেই। লকডাউনে কাজ হারিয়ে নিজের বৌ-বাচ্চার মুখে দুমুঠো ভাত তুলে দেওয়ার জন্য এই পেশাতে আসতে বাধ্য হয়েছে। অপেশাদার চোরের সরল স্বীকারোক্তি এলাকার সকলের মন ছুঁয়ে যায়। এলাকার লোকজন নিজেদের উদ্যোগে চোরের বাড়িতে যোগাযোগও করেন।  তারা জানতে পারেন সত্যিই ওই ব্যক্তি নিজের পরিবারকে দুবেলা দুমুঠো খাবার জোগাতে পারছেন না। 

{link}
নাড়ুগোপাল মুখার্জী বলেন, 'কোভিড অতিমারী অনেক মানুষের কাজ কেড়ে নিয়েছে। তাই অনেকে পরিস্থিতির চাপে পড়ে  অন্য উপায়ে রোজগার করতে বাধ্য হচ্ছেন। আজ যাকে আমার বাড়ির কাছ থেকে ধরা হয়েছিল সেও একজন ছাপোষা  সাধারণ মানুষ। ওই ব্যক্তিকে যদি জেলে পাঠানো হতো তবে তার পরিবার আরও সমস্যার মধ্যে পড়তেন তাকে জেল থেকে ছাড়াতে। এলাকা ছাড়ার আগে ওই চোর সকলকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে যায় -আর কোনোদিন সে এই কাজ করবে না। তবে চুরি করতে এসে তার প্রাপ্তি এলাকার লোকদের ভালোবেসে হাতে গুঁজে দেওয়া কিছু টাকা।
নাড়ুবাবু জানান,'ওই ব্যক্তিকে আজ আমার বাড়িতে পেট ভরে খাবার খাইয়ে তাকে চুরির কাজ ছেড়ে দিতে বললাম।‘ তিনি তাকে রোজগার খুঁজে দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন।

{ads}

news police councellor TMC Baharampur Murshidabad Humanitary works theif West Bengal India

Last Updated :