রাজ্যে সভাপতি পদ পরিবর্তন। বদলাচ্ছে দলের সার্বিক চিত্র। বর্তমানে চলতে থাকা এই টালমাটাল পরিস্থিতিতে তরুণ তুর্কি সুকান্তের ওপরই ভরসা রাখলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। রাফ অ্যান্ড টাফ হিসেবে খ্যাত দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে তুলনায় নরমপন্থী, মার্জিত এবং সর্বোপরি উচ্চ শিক্ষিত সুকান্ত মজুমদারকে রাজ্য বিজেপির সভাপতির পদে বসিয়ে বিজেপি এক ঢিলে অনেকগুলো পাখি মারল বলে ধারণা রাজনৈতিক মহলের। কিন্তু হঠাৎই কেন আচমকা এই সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
রাজ্য বিজেপিকে বাঙালির ঘরে ঘরে যিনি পৌঁছে দিয়েছেন, তিনি দিলীপ ঘোষ। রাজ্য বিজেপির সভাপতি পদে অভিষেক হওয়ার পরেই দলকে তিনি প্রাসঙ্গিক করে তুলেছেন এ রাজ্যে। কখনও রাজ্যের শাসক দলকে ধমক, কখনওবা হুঁশিয়ারি, কখনও আবার আলটপকা মন্তব্য করে দলকে নিয়ে গিয়েছেন ভিন্ন উচ্চতায়। তার ফসলও ঘরে তুলেছে বিজেপি। এ রাজ্যে দুই থেকে লোকসভায় বিজেপির প্রতিনিধিত্ব বেড়ে হয়েছে ১৮। বিজেপির একটি অংশের মতে, এটা হয়েছে দিলীপ ঘোষের লড়াকু মনোভাবের জেরেই।
এহেন দিলীপকে রাজ্য সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে বসানো হল বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারকে। তার পরেই ওঠে মোক্ষম প্রশ্ন, কোন অঙ্ক সমাধান করতে সুকান্তকেই বেছে নেওয়া হল?
{link}
গেরুয়া শিবিরের একটি সূত্রে খবর, সুকান্তকে রাজ্য সভাপতির পদে বসিয়ে বিজেপি এক ঢিলে অনেকগুলো পাখি মারল। প্রথমত, দিলীপ ঘোষ রাফ অ্যান্ড টাফ। তাঁর জায়গায় নরমপন্থী সুকান্তকে বসিয়ে বিজেপি আমি তোমাদেরই লোক গোছের একটা ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে চেয়েছে। দ্বিতীয়ত, সুকান্ত উচ্চ শিক্ষিত। এ রাজ্যে শিক্ষিতের কদর একটু বেশি। উচ্চ শিক্ষিত সুকান্তকে বসিয়ে বিজেপি এই বার্তাই দিতে চেয়েছে যে, সুকান্তের মতো উচ্চ শিক্ষিত লোকেরাও বিজেপি করেন। সর্বোপরি, সুকান্ত উত্তরবঙ্গের প্রতিনিধিত্ব করেন। দল যে কলকাতা কিংবা দক্ষিণবঙ্গ কেন্দ্রিক, সে অভিযোগ উঠেছে একাধিকবার। সুকান্তকে রাজ্য সভাপতি পদে বসিয়ে সেই ক্ষোভের ক্ষতেই প্রলেপ দেওয়ার চেষ্টা হল বলে ধারণা রাজনৈতিক মহলের।
কিন্তু এতো কিছুর পরেও সুফল মিলবে কি? প্রশ্ন উঠছে এই ক্ষেত্রেই। এখনও বহু বিজেপি নেতার তৃণমূলের যোগদান করার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মতামত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। যে ভীত নড়েছে সেই ভীত পুনরায় গড়ে তোলা এখন যথেষ্ট, যথেশই কঠিন কাজ।
{ads}