রাজনীতি বোঝা দায়- বাংলার সাধারন মানুষ উঠতে বসতে এই কথা বলতে অভ্যস্ত। এটা যে আরও বলা কেন হয় তার আরও এক উদাহারন চোখে পড়ল হাওড়ার রাজনৈতিক মহলে। একুশের নির্বাচনের আগে দলবদলের ঝড় দেখা যায় গেরুয়া শিবিরের দিকে। কিন্তু এখন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির পরাজয়ের পর সেই ঝড় ঘুরেছে। এবার সব হাওয়াই বয়েছে ঘাসফুল শিবিরের দিকে।
তাঁর বিরুদ্ধে পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতির অভিযোগে এক সময় সরব হয়েছিল তৃণমূল। তিনি হেরে যাওয়ার পর পুরসভায় তাঁর ঘর ধোয়া হয়েছিল ৩১ ঘড়া জল দিয়ে। হাওড়ার পুরসভার এহেন প্রাক্তন মেয়র মমতা জয়সওয়ালকে দলে নিল তৃণমূল। বৃহস্পতিবারের বারবেলায় হাওড়ার শরৎসদনে কাস্তে হাতুড়ি ছেড়ে মমতা হাতে তুলে নেন জোড়াফুল আঁকা ঝান্ডা। দলবদলের ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী তথা হাওড়ার তৃণমূল নেতা অরূপ রায় ও হাওড়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেস(সদর)-এর সভাপতি কল্যাণ ঘোষ।
{link}
কাস্তে-হাতুড়ি চিহ্নে হাওড়া পুরনিগমের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছিলেন মমতা। ডাকাবুকো নেত্রী বলতে যা বোঝায়, মমতা তা নন। তা সত্ত্বেও তাঁর নাম মেয়র পদের জন্য প্রস্তাব করেন হাওড়া সদরের সাংসদ সিপিএমের স্বদেশ চক্রবর্তী। মেয়র পদে মমতার নাম প্রস্তাব করায় স্বদেশের সঙ্গে সিপিএমের হাওড়া জেলা কমিটির বিতণ্ডাও হয়। তার পরেও মমতাকেই মেয়র করার সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন স্বদেশ। তাঁর যুক্তি ছিল, উত্তর হাওড়া তুলনায় অবহেলিত। তাই উত্তর হাওড়ার মমতাকেই মেয়র করতে হবে। স্বদেশের ধারালো যুক্তির কাছে হার মানে জেলা কমিটি। মেয়র হন মমতা।
{link}
মমতার বিরুদ্ধে পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতির অভিযোগে সরব হয় তৃণমূল। তিনি মেয়র পদ থেকে সরলে ৩০ ঘড়া জল দিয়ে তাঁর ঘর ধোয়া হবে বলেও ঘোষণা করে তৃণমূল। মমতাকে দুর্নীতিতে পূর্ণ, অপদার্থ, পার্ট টাইম মেয়র অভিধায় ভূষিত করে তৃণমূল। সেই মমতাই বৃহস্পতিবার যোগ দিচ্ছেন তৃণমূলে। মমতা তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় ক্ষুব্ধ পুরসভার তৃণমূল শ্রমিক সংগঠন। তাঁদের বক্তব্য, যাঁকে সরিয়ে চেয়ার ধোয়া হল ৩১ ঘড়া জল দিয়ে, কোন স্বার্থে ফের তাঁকেই নেওয়া হচ্ছে দলে? প্রশ্ন তাঁদের। তবে কি হাওড়ায় পুরসভার নির্বাচনের প্রধান মেয়রের মুখ হতে চলেছেন মমতা? প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেসের দলের অন্দরেও। যা নিয়ে দলের কর্মীদের একাংশের মধ্যে ইতিমধ্যেই ক্ষোভের আগুন জ্বলতে শুরু করেছে। কি হবে ভবিষ্যৎ?
{ads}